বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Proval Logo

ন্যাশনাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য নতুন  পর্ষদে আবদুল আউয়াল মিন্টু

প্রকাশিত - ২১ আগস্ট, ২০২৪   ০৭:০৯ পিএম
webnews24

প্রভাত অর্থনীতি : ন্যাশনাল ব্যাংকের আগের পরিচালকদের অনেকেই চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংকটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকসহ ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক বর্তমানে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যার সব কটিই সংকটে পড়েছে।
সংকটে থাকা বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  নতুন পর্ষদ গঠনের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ব্যাংকটির উদ্যোক্তা ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। এ ছাড়া সাবেক পরিচালক জাকারিয়া তাহের ও মোয়াজ্জেম হোসেনকেও পরিচালক পদে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি ব্যাংকটিতে চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই সাতজনের মধ্য থেকে ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন। একই সঙ্গে ব্যাংকটি পরিচালনার জন্য নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও বাংলাদেশ ব্যাংকে নতুন গভর্নর নিয়োগের পর এটি এ ধরনের প্রথম পদক্ষেপ। দুর্বল ও সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়ার আদেশে স্বাক্ষর করেন। আদেশে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নীতিনির্ধারণী দুর্বলতার কারণে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি, ব্যাংকিং সুশাসন ও শৃঙ্খলা বিঘœ করার মাধ্যমে ব্যাংক ও আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী কর্মকা-ে পর্ষদ সম্পৃক্ত। এ জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন ৪৭ (১) ও ৪৮ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও জনস্বার্থে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিলের আদেশ দেয়া হলো।
আলাদা এক আদেশে ন্যাশনাল ব্যাংকে শেয়ারধারী পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়। স্বতন্ত্র পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জুলকার নায়েন, সীমান্ত ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুখলেসুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মেলিতা মেহজাবিন ও সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ আবদুস সাত্তার সরকার। জানতে চাইলে আবদুল আউয়াল মিন্টু গণমাধ্যমকে। সেটি করারই চেষ্টা করা হবে।
এর আগে মে মাসে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর সাড়ে চার মাস আগে আরও একবার পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। ন্যাশনাল ব্যাংক একসময় নিয়ন্ত্রণ করত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিকদার গ্রুপ। মে মাসে পর্ষদ পুনর্গঠনের সময় সিকদার গ্রুপকে ব্যাংক থেকে বের করে চেয়ারম্যান করা হয় চট্টগ্রামের কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানকে।
সে সময় পুনর্গঠিত পর্ষদে অন্য পরিচালকদের অনেকে এস আলম গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট ছিলেন। স্বতন্ত্র পরিচালকদের একজন ছিলেন হিসাববিদ রতœা দত্ত, যিনি এস আলম গ্রুপের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) সুব্রত কুমার ভৌমিকের স্ত্রী। আরেক পরিচালক এহসানুল করিম ছিলেন এস আলম গ্রুপের আইনজীবী। নতুন পর্ষদে তাঁদের সবাই বাদ পড়েছেন।
এর আগে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়। তখন সিকদার পরিবারের অন্য সদস্যদের সরিয়ে শুধু পারভীন হক সিকদারকে রাখা হয়। চেয়ারম্যান করা হয় অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কমকর্তা জানান, গত মে মাসে এস আলম গ্রুপের চাপে ব্যাংকটির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছিল। এবার ব্যাংকটিকে আগের উদ্যোক্তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন