বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Proval Logo

গঠিত হচ্ছে ব্যাংক কমিশন : আসছে ১০০ দিনের রূপকল্প পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ

প্রকাশিত - ২৮ আগস্ট, ২০২৪   ০৯:৩০ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, অর্থ আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেজন্য বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করা হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে গতকাল বুধবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই পুনরুদ্ধার কাজে সরকার ব্যাংকগুলোর নতুন ব্যবস্থাপনা পর্ষদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ, পুলিশের সিআইডি ও দুদকের যৌথ সহায়তা নিচ্ছে। 
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অর্থ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা চেয়ে ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে। অর্থ পুনরুদ্ধার করে দেশে ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠন করার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেয়ার পরপরই দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে একটি ব্যাংক কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত আসে। ব্যাংক খাত সংস্কারের মাধ্যমে টেকসই করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা তখন জানানো হয়। একই সঙ্গে আর্থিক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি এবং সংস্কার বিষয়ে একটি রূপকল্প তৈরি করে তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত হয়। 
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার আর্ন্তজাতিক মানদ- পরিপালনে সক্ষম একটি শক্তিশালী ব্যাংক খাত গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে মন্তব্য করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই উদ্দেশ্য অর্জনের কার্যক্রমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়, আন্তর্জাতিক কারিগরি সহায়তা ও অর্থের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার অর্থ আত্মসাৎকারীদের দেশি-বিদেশি সম্পদ অধিগ্রহণ এবং বিদেশ হতে ফেরত এনে ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলছে, দেশে-বিদেশে পাচার ও আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ লক্ষ কোটি টাকা বলে ধারণা করা হলেও প্রকৃত পরিমাণ কত তা নিরূপণে সরকার কাজ করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তাদের নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাত করেছেন এবং তা বিদেশে পাচার করেছেন, যার সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া উদ্যোগ তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই ধরনের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে ইতোমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবশিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহেও সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে। নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত এসব অর্থের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং তাদের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থের প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে অডিট কার্যক্রম শুরু করা হবে। সরকার শিগগিরই একটি ব্যাংক কমিশন গঠন করবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করা হবে এবং ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠনের জন্য ৬ মাসের মধ্যে একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হবে। তবে ব্যাংকগুলোর এই পুনর্গঠন এবং আর্থিক খাতের কাঠামোগত সংস্কার যে একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, সে কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধানের কার্যালয় বলছে, সরকার বাংলাদেশের আর্থিক খাতকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার ব্যপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন