শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১
Proval Logo

কারফিউ শিথিলের পর রাজধানীতে তীব্র যানজট

প্রকাশিত - ২৫ জুলাই, ২০২৪   ০৯:২২ এএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : কারফিউ শিথিলের পর বুধবার থেকে সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলায় অফিসগামী যাত্রীদের চলাচল বেড়েছে। এতে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।সড়কে পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় অফিসগামী যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। মেট্রো রেল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। মতিঝিল অফিসপাড়ার অনেকেই মেট্রোরেল ধ্বংসের চরম সমালোচনা করেন।
বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর উত্তরা, ফার্মগেট, মিরপুর, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, কল্যাণপুর, বনানী, তেজগাঁও, মহাখালীসহ বিভিন্ন রাস্তায় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। যানজটে ঢাকার রাস্তায় একরকম স্থবির অবস্থা।
মহাখালী থেকে গুলশান-১ নম্বর হয়ে বাড্ডার সড়কেও দেখা গেছে যানজট। একই পরিস্থিতি রামপুরা থেকে নতুনবাজারের সড়কেও। গণপরিবহন না পাওয়ায় এবং যানজটের কারণে অফিসগামী যাত্রীরা বিপদে পড়েছেন। কখন পৌঁছাতে পারবেন তা নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন তারা।
বাসের এক যাত্রী জানান, বাস ১০ সেকেন্ড চলে তো ১০ মিনিট থেমে থাকে। বিমানবন্দর সড়ক, মহাখালী, তেজগাঁও, সাত রাস্তার মোড়ে প্রচুর যানজট দেখা গেছে। তেজগাঁও ছাড়া আর কোথাও ট্রাফিক পুলিশ দেখেননি বলে জানান এক যাত্রী।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকাতেও সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রচ- যানজট দেখা গেছে। আশপাশের অলিগলিতেও যানজট ছিল। গণপরিবহন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন কর্মস্থলগামী মানুষ। সায়েদাবাদে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তায় যানজট লেগে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে, কারফিউ শিথিলের সময়ে বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন অফিস খোলা থাকছে। তবে যানবাহন পেতে দেরি হওয়ায় এবং যানজটে পড়ে অনেকে সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না। অফিস ছুটিরও পরও যানজটের এমন চিত্র দেখা যায়।

যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর

যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর ঘুরে দেখা গেছে অগ্নিকান্ডের ফলে রাস্তার ানেক স্থানে পিচ পুড়ে গর্ত হয়ে গেছে। ভাঙাচোরা সড়ক বিভাজকগুলো পড়ে আছে যত্রতত্র। এক পাশে পড়ে রয়েছে পুড়ে যাওয়া বাসের কঙ্কাল, অন্য পাশে ট্রাক। সেই ট্রাকের কঙ্কালকে সড়কের মাঝ থেকে রেকারে বেঁধে টেনে নিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যন্ত্র দিয়ে চলছে আগুনের ছাইভস্ম পরিষ্কারের কর্মযজ্ঞ। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত সড়কে তা-বের পর এখন কেবলই দগদগে ঘা। 
গতকাল বুধবার হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে শনির আখড়া পয়েন্টে নামতে গেলেই ফ্লাইওভারের শেষ প্রান্তে দেখা যায় কয়েকটি স্থানে আগুন জ্বালানোর ক্ষতচিহ্ন। কার্পেটিংয়ের বিটুমিন পুড়ে অসমতল হয়ে আছে ফ্লাইওভারের মসৃণ রাস্তা। কিছু দূর এগোলেই দেখা যায় পুড়ে অঙ্গার ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা। সেখানে চলছে মেরামতের কার্যক্রম। মিস্ত্রি-প্রকৌশলীরা ঠিকঠাক করার কাজ করছেন। আরেকটি গেট দিয়ে অ্যানালগ পদ্ধতিতে চলছে টোল আদায়। যেখানে গাড়ি চলাচল করছে, সেখানে চলছে টোল আদায়। 
কিছু দূর এগোলেই দেখা যায় দনিয়ার মেসার্স ফাতেমা নাজ পেট্রোল অ্যান্ড সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া বড় বাস। গত কয়েক দিনের আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীরা সেটাকে পুড়িয়ে দিয়েছিল। তার পরই মারকাজুল তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার সামনে চোখে পড়ে আরেকটি পোড়া বাস। সেখানে রাস্তার ছাইভস্মের স্তূপগুলো এক্সক্যাভেটর দিয়ে ঠেলে রাস্তার পাশে জমা করছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। 
সানারপাড়ে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক বিভাজকগুলো ফেলে দেওয়া হয়েছে রাস্তার পাশে। সড়কের মাঝে পড়ে আছে মজবুত কংক্রিটের তৈরি সড়ক বিভাজকের খ--বিখ-। যেগুলো অবশিষ্ট আছে, সেগুলোও লন্ডভন্ড। আরেকটু সামনে গেলে চোখে পড়ে হলিউড ফিটনেস জিমের সামনে পোড়া বাস ও রেকার। সাইনবোর্ড এলাকায় দেখা মেলে একটি পুড়ে যাওয়া ট্রাককে টেনেহিঁচড়ে ওয়ার্কশপে নিয়ে যেতে কিছু লোকের চেষ্টা। 
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে আন্দোলনের সময় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কীভাবে কোথা থেকে যে জড়ো হয়েছিল, সেটা তাঁরা চিন্তাও করতে পারছেন না। সবাই অপরিচিত। 
গতকাল সকাল থেকেই যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে ছিল সেনাবাহিনীর টহল। বিভিন্ন স্থানে সাঁজোয়া যান রেখে তারা সতর্ক অবস্থায় ছিল। এ ছাড়া ছিল র‌্যাব-পুলিশেরও আনাগোনা। তবে বিক্ষোভকারীদের আর দেখা মেলেনি।
প্রভাত/টুর


 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন