• মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০১:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম

জিআই তারের নেট তৈরির সফলতার গল্প বললেন ভালুকার মামুন

প্রভাত রিপোর্ট / ৭০ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫

সাজ্জাদুল আলম খান, ভালুকা : ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ধীতপুর ইউনিয়নের মীর বাড়ির মৃত মীর গোলাম রব্বানীর ছেলে মামুন হোসেন (মামুন) আজ এক তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। এইচএসসি পাস করে বিএতে ভর্তি হলেও আর্থিক সংকটে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি। জীবিকার তাগিদে পুকুরে মাছ চাষ ও লেয়ার মুরগি পালন শুরু করলেও লোকসানের মুখে পড়ে হতাশায় আটকে যান। প্রায় তিন-চার বছর কোনো ব্যবসায় হাত দিতে পারেননি তিনি।
হতাশার মধ্যেই ইউটিউবে জিআই (গ্যালভানাইজড আয়রন) তারের নেট তৈরির মেশিনের ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হন মামুন। স্বল্প মূল্যে মেশিন কিনে এই পেশায় যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে মেশিন কিনে কয়েক দিন প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ বাড়ির বারান্দায় কাজ শুরু করেন। প্রথমদিকে ৬-৭ মাস কোনো অর্ডার না পেলেও হাল না ছাড়েন মামুন। লিফলেট বিলি, দোকানের দেয়ালে পোস্টার টাঙানো এবং অনলাইনে প্রচারের মাধ্যমে মানুষের আস্থা জয় করেন। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠান থেকে গফরগাঁও, ত্রিশাল, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে জিআই নেট সরবরাহ করা হয়।
প্রতি মাসে খরচ বাদে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় হয় মামুনের। অর্ডার বৃদ্ধি পেলে লাভও বাড়ে। তার কারখানায় স্কুলপড়ুয়া দরিদ্র শিক্ষার্থীরা অবসর সময়ে নেট বুননের কাজ করে নিজেদের শিক্ষাব্যয় মেটায়। মামুনের ভাষ্য, “সরকারি সহযোগিতা পেলে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে আরও বেশি বেকারকে কাজের সুযোগ দিতে পারব।”
কোভিড-১৯ সময়ে অর্ডার কমলেও বর্তমানে জিআই তারের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। তবে গ্রাহকদের মধ্যে সন্তুষ্টির ছাপ স্পষ্ট। মো. ফয়সালের মতে, “জিআই নেট টেকসই—১০ থেকে ১৫ বছরও ক্ষয় হয় না। ঘরোয়া বেড়ার জন্য এটি আদর্শ।”
মামুন চান তার সাফল্য যেন অন্য তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়। স্থানীয় যুব সমাজের কাছে তার বার্তা: “ইউটিউব শুধু বিনোদনের নয়, এখানে জ্ঞান ও উদ্যোগের অসীম সম্ভাবনা রয়েছে।” মামুনের এই যাত্রা প্রমাণ করে, অধ্যবসায় ও উদ্ভাবনী চিন্তা দিয়ে অর্থনৈতিক সংকটও জয় করা সম্ভব। তার সাফল্য কেবল ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক উন্নয়নেরও একটি মডেল।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও