প্রভাত সংবাদদাতা, রাঙামাটি
ঈদের ছুটিতে পাহাড় ও হ্রদে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা বরাবরই পছন্দের তালিকায় থাকে পর্যটকদের। ভ্রমণ পিপাসুরা যান্ত্রিক শহরের ক্লান্তি দূর করতে ভ্রমণ করেন পাহাড়-হ্রদে ঘেরা পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে। ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে বিনোদন কেন্দ্রগুলো। এবারের ঈদের ছুটি ঘিরে প্রচুর পর্যটক বেড়াতে আসবেন বলে ধারণা হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট মালিকদের। পর্যটকদের বরণে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। প্রস্তুত রাঙামাটির রয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও। ঈদের টানা ছুটিতে সাজেক ভ্যালি, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই লেক, পলওয়েল পার্ক, আরণ্যক ও সুবলং ঝর্ণাসহ আরও মনোমুগ্ধকর পর্যটন স্পটগুলো মুখরিত হয়ে উঠবে হাজার হাজার পর্যটকে। এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদে পর্যটকদের বরণ করতে রাঙামাটির পর্যটন আইকনখ্যাত ঝুলন্ত সেতুতে চলছে সংস্কার কাজ। পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে সেতুতে দেওয়া হচ্ছে রঙ। পাশাপাশি সেতুর পুরাতন পাটাতন বদলে নতুন পাটাতন লাগানো হচ্ছে, অন্যান্য জরুরি সংস্কার কাজও চলমান রয়েছে। রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ। বোটে করে হ্রদের নীল জলে নৌবিহার করতে চান পর্যটকরা। তার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে টুরিস্ট বোট সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। টুরিস্ট বোটচালক মো. সাইফুল উদ্দীন বলেন, পুরো রমজান মাসে রাঙামাটিতে তেমন পর্যটক সমাগম হয়নি। আমরা আশা করছি সামনের ঈদের ছুটিতে বেশ ভালো একটা পর্যটক সমাগম হবে এবং আমরাও ভালো ব্যবসা করতে পারবো। পর্যটকদের বরণ করে নিতে আমরা আমাদের যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ করেছি।
রাঙামাটি পর্যটন নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, পর্যটকদের বরণ করে নিতে আমরা আমাদের সব ধরনে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। বোটগুলো সংস্কার করা, নতুন রঙ করাসহ সব কাজ শেষের পথে। টুরিস্ট বোট ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের জন্য অপেক্ষায় আছেন। আশা করছি ঈদের ছুটিতে অনেক পর্যটক সমাগম হবে। জেলার আরেক অন্যতম বিনোদন স্পট পলওয়েল পার্কেও চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। নতুন রূপে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠমিস্ত্রি ও শিল্পীরা। পলওয়েল পার্কের বিভিন্ন ভাস্কর্যে চলছে রঙের কাজ। পাশাপাশি পুরো পার্ককে নতুনভাবে রঙিন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সংস্কার করা হচ্ছে পার্কের একমাত্র ঝুলন্ত সেতুটিও।
এদিকে ইতিমধ্যে শহরের বেশিরভাগ হোটেল-মোটেলগুলোতে অধিকাংশ রুম বুকিং হয়েছে। পর্যটকের চাপ সামাল দিতে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি সেরে রাখছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। শহরের রিজার্ভ বাজার গ্রীন ক্যাসেল হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. জুয়েল রানা বলেন, রোজার মাসে আমাদের তেমন একটা ব্যবসা হয়নি। কিন্তু আশা করছি সামনের ঈদের ছুটিতে প্রচুর পর্যটক রাঙামাটি ভ্রমণে আসবেন। তার জন্য আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে আমাদের হোটেলের প্রায় ৬০ শতাংশ বুকিং রয়েছে।
হোটেল মতি মহলের ব্যবস্থাপক চন্দন মজুমদার বলেন, আমাদের হোটেলের প্রায় ৪০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং রয়েছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই শতভাগ বুকিং হয়ে যাবে।