• মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন

থাইল্যান্ডে মোদি–ইউনূস দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হচ্ছে না: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

প্রভাত রিপোর্ট / ৫ বার
আপডেট : শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫

প্রভাত ডেস্ক

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনের আসরে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হচ্ছে না। তিনি কেবল থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে আগামী ৩ এপ্রিল থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনার জন্য বৈঠক করবেন। থাইল্যান্ড সফরে ওটাই মোদির একমাত্র দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি যাতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন, সে জন্য বাংলাদেশ সরকার ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছিল।
নরেন্দ্র মোদি বিমসটেকের বৈঠকে যোগ দিতে থাইল্যান্ড যাচ্ছেন ৩ এপ্রিল। পরের দিন তিনি সরকারি সফরে ব্যাংকক থেকে চলে যাবেন শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়কের আমন্ত্রণে মোদি সে দেশ সফর করবেন ৪ থেকে ৬ এপ্রিল। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক না হলেও ব্যাংককে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে মোদির কিছু সময়ের জন্য সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে কি না, সে বিষয়ে সরকারি বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্র নেতা একই আসরে থাকার দরুণ দুজনের মধ্যে অবশ্যই সৌজন্য বিনিময় হবে। নিভৃতে দুই নেতার মধ্যে কিছু আলাপচারিতাও হতে পারে। তবে তা হবে অনানুষ্ঠানিক। নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ। তেমন হলে সেটাও হবে এই দুই প্রতিবেশী দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণ করেন গত বছরের আগস্টে। সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনে দুই নেতার মধ্যে মুখোমুখি দেখা হয়নি। মোদি দেশে চলে আসার পর ইউনূস নিউইয়র্কে পৌঁছেছিলেন।
অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় আট মাস পেরিয়ে গেলেও দুই নেতা মুখোমুখিও হননি। যদিও ক্ষমতা গ্রহণের পর ইউনূসকে মোদি অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষেও অভিনন্দন জানিয়ে ইউনূসকে চিঠি লিখেছেন। কিন্তু এখনো দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হলো না।
ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী দুইবার স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে সে দেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিবুল আলম ভারতের সংবাদপত্র দ্য হিন্দুকে এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূস প্রথম সফরে ভারতেই যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের দিক থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ইউনূস প্রথম সফরে এই মুহূর্তে চীনে রয়েছেন।
২০১৮ সালে বিমসটেকের চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলন বসেছিল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে। পঞ্চম শীর্ষ সম্মেলন হয়েছিল ভার্চুয়্যালি। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয়। ২০২২ সালে। শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে ষষ্ঠ সম্মেলন হতে চলেছে ব্যাংককে। সম্মেলনের মূল সুর ‘বিমসটেক…সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও মুক্ত’। এই সম্মেলনেই সংগঠনের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবে বাংলাদেশ।
বিমসটেক কাঠামোর মধ্যে সদস্যদেশগুলো কীভাবে পারস্পরিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়াতে পারে, বাণিজ্য বৃদ্ধি, লগ্নিসহ বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, শীর্ষ নেতারা সেই সব বিষয়ে আলোকপাত করবেন। একই সঙ্গে আলোকপাত করা হবে জলবায়ুর ক্ষেত্রে।
বিমসটেকের সদস্যদেশগুলো হচ্ছে—বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও