হাবিবুর রহমান, ডেমরা
রাজধানীর ডেমরায় ডিএসসির ৬৪ নং ওয়ার্ডের পাড়া ডগাইর নতুন পাড়া এলাকার ৫২৪ নং বাড়িতে এক বিধবা তার নিজ বাসায় খুন হন। প্রথমে মাহফুজা আক্তার লিপি (৪৮) এর মৃত্যু নিয়ে ধোয়াশা থাকলেও পরে তা পরিস্কার হয় যে তার নিজ ঘড়ে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কে হত্যা করলো এবং কেন করলো তা এখনো জানতে পারেনি পুলিশ অথবা মৃতের পরিবারের লোকজন। পুলিশ এবং সিআইডির একটি টিম বিভিন্ন আলামত থেকে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন যে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। মৃত মাহফুজা আক্তার লিপি ডেমরা বাসের পুল পাড়া ডগাইর নিজ বাড়িতে থাকতেন। তার স্বামীর নাম মৃত আবুল সর্দার। বাবার নাম নুর মোহাম্মদ।
সরেজমিনে মৃতের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লিপির বিয়ের পর গত ১০/১২ বছর আগে তার স্বামী মারা যায়। তার সংসারে কোনো সন্তান না থাকার কারণে সে একাই ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। তবে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। এ ছাড়া উভয়ের নামে মামলা প্রতি মামলা ও চলছিল।
মৃতের ছোট বোন মাকসুদা হক সীমা ও খালাতো ভাই আব্দুল্লাহ বলেন, প্রায় ১০/১২ বছর আগে তার স্বামী মারা যাওয়ার আগে স্বামীর বসত বাড়িটি স্ত্রী লিপির নামে লিখে দিয়েছিল। এসব বিষয় নিয়ে তার স্বামীর ভাই—বোন ভাতিজা শাশুড়ি সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মাহফুজা আক্তার লিপির প্রতি ক্ষোভ ছিল। সেই থেকেই লিপির প্রতি তারা ভাল আচরণ করতেন এবং প্রায় সময় ঝগড়া ঝাটি করতো এছাড়া বেশ কিছুদিন আগে তার বোন লিপিকে বলেছেন আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাকে মেরে ফেলবে আমাকে হয়তো তারা বাঁচতে দেবে না। আমরা ধারণা করছি তারা জমি সংক্রান্ত এই বিরোধের কারণে লিপিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গেছে।
উল্লেখ্যঃ ৩০ মার্চ গত রোববার ট্রিপল নাইনে সংবাদ পেয়ে রাত সাড়ে সাতটার দিকে ডেমরা বাঁশের পুল পাড়া ডগাইর নিজ বাড়ির দ্বিতীয় তলায় রুমের খাটের উপর থেকে মাহফুজা আক্তার লিপি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ওই সময়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতের ঘরের ফটকের কেচি গেট ও দরজা খোলা অবস্থায় পায়। এদিকে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে মৃতের প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ সহ জরুরি আলামত সংগ্রহ করেছে। পরে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে দেখা গেছে নিচের ঘরের কেচি গেট সহ দরজা খোলা। মুখের উপর বালিশ চাপা দেওয়া। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল হয়তো চুরি ডাকাতির ঘটনা বা পূর্ব শত্রুতার জেরে বিধবা নারীকে হত্যা করা হয়েছে বালিশ চাপা দিয়ে। কিন্তু বিভিন্ন আলামতের দৃষ্টিতে আমরা মানে করছি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। এ বিষয়ে ডেমরা থানায় একাট হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ এবং সিআইডি কাজ করছে।