মো. কামাল উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর: পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন। পরিবারের সদস্যরা সবাই ঈদ–আনন্দ উদ্যাপনে ব্যস্ত। এর মধ্যেই হঠাৎ প্রসবব্যথা ওঠে গৃহবধূ মিতু বেগমের। প্রসবের জন্য মিতুকে কোথায় ভর্তি করাবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে নিয়ে যান স্থানীয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে। সেখানে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে একটি মেয়েসন্তানের জন্ম দেন মিতু।
মিতু বেগম লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের কেরোয়া গ্রামের মো. রাশেদের স্ত্রী। মিতুর স্বামী রাশেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের দিন হওয়ায় চিকিৎসক-নার্স পাব কি না, যথাযথ সেবা পাওয়া যাবে কি না, সংশয়ে ছিলাম। কিন্তু ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে আমি অভিভূত। তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় সব সেবা পেয়েছি। মা-মেয়ে দুজনেই সুস্থ রয়েছেন।’কেবল মিতু বেগম নয়, গত ২৮ মার্চ থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত আট দিনে ৫৫ জন প্রসূতি স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে। ঈদের ছুটিতেও প্রসব সেবা পেয়ে খুশি এসব প্রসূতি।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, লক্ষ্মীপুরে ৩৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র চালু রয়েছে। এবারই প্রথম ঈদের ছুটিতে সব কটি কেন্দ্র চালু রাখা হয়েছে। প্রসব ছাড়াও এসব স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে ১৭৩ জন প্রসবপূর্ব সেবা, ৯০ জন প্রসব–পরবর্তী সেবা নিয়েছেন। এ ছাড়া চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন তিন শতাধিক রোগী।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, এবারই প্রথম ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা বিভাগের অধিকাংশ চিকিৎসক, ভিজিটর, অ্যাটেনডেন্ট, নার্স ডিউটিতে সময় পার করেছেন। মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রসহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে ছুটির ৯ দিন ২৪ ঘণ্টা সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত এক ঘণ্টার জন্যও সেবা ব্যাহত হয়নি।