• বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সাউথইস্ট ব্যাংক-১০ম সাইজিউর প্রযুক্তি কাপ ২০২৫ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ফরাজী হাসপাতালে বিশেষ ছাড়ে চিকিৎসা সেবা পাবেন আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহক ও কর্মীরা জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্তের প্রত্যাশা রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে গ্রহণযোগ্য হবে না ডেমরায় নীতিমালা ভঙ্গকারী নির্মানাধীন ভবন উচ্ছেদ করতে রাজউকের অভিযান লক্ষীপুর পৌরসভার ৩৪ টি নাগরিক সুবিধা অনলাইন উদ্বোধন পীরগঞ্জ পুর্ব চৌরাস্তায় ব্যবসায়ীদের বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত পীরগঞ্জ বৈরচুনায় ভারতে অনুপ্রবেশের সময় বিজিবি’র হাতে আটক-৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে বিএনপি : আসিফ নজরুল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় সন্তুষ্ট নয় বিএনপি

রাখাইনেই ফিরতে চায় রোহিঙ্গারা

প্রভাত রিপোর্ট / ৭ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫

প্রভাত সংবাদদাতা, টেকনাফ: মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি অধিকৃত রাখাইন রাজ্যে হানাহানি বন্ধ হলে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে রাখাইনেই ফেরতে চান কক্সবাজারের উখিয়ার আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা। তবে আরাকান আর্মির দখলে থাকা রাখাইনে কীভাবে তাদের ফেরাবে জান্তা সরকার, সে প্রশ্নও আছে রোহিঙ্গাদের। এক্ষেত্রে আগে জান্তা সরকারকে আরাকান আর্মির সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে। সমঝোতা হলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নিজেদের ভিটায় ফেরাতে হবে। না হয় আবার অনিশ্চয়তায় পড়তে হবে। সোমবার (০৭ এপ্রিল) উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নাগরিক ও তাদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, ১১ মাসের বেশি সময় ধরে লড়াই-সংঘাতের পর গত বছরের ৮ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যের ৮০-৯০ শতাংশ এলাকা (২৭০ কিলোমিটার) নিয়ন্ত্রণে নেয় আরাকান আর্মি। এরপর রাজ্যের রাজধানী সিথুয়ে (আকিয়াব) দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে আরকান আর্মি। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি দুই মাস রাখাইনে শান্ত অবস্থা বিরাজ করলেও মার্চের শুরু থেকে আবার সংঘাতে জড়ায় দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী।
২০২৪ সালে রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের মাংগালা গ্রাম থেকে পালিয়ে টেকনাফের দমদমিয়া ক্যাম্পে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নেন মোহাম্মদ আমির হোসেন (৫০)। মিয়ানমারে ফেরার বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ভিটেমাটি অর্থাৎ রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মির দখলে। সেখানে আমাদের নিয়ে কোথায় রাখবে, এটি কিন্তু এখনও স্পষ্ট করেনি জান্তা সরকার। তারা কোথায় নিতে চায়, আমরা যদি ভিটেমাটি ফিরে না পাই তাহলে কোথায় যাবো। কীভাবে যাবো। সেজন্য আগে জান্তা সরকারকে আরাকান আর্মির সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে। সমঝোতা হলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা আরাকানেই ফিরতে চাই। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জান্তা সরকারের নতুন কোনও কৌশল কিনা সেটি চিন্তা করে দেখা দরকার। কারণ সেখান থেকে আমাদের বিতাড়িত করেছিল। এখন রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে জান্তা সরকারের যুদ্ধ চলছে। এমন পরিস্থিতির মধ্য কীভাবে তারা আমাদের সেখানে নেবে। সেখানেও যদি আশ্রয়শিবিরে থাকতে হয়, তাহলে আবার অনিশ্চয়তায় পড়তে হবে আমাদের।
কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা তরুণ আজিজুর রহমান বলেন, আমরা রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে চাই। সেজন্য নিশ্চয়তা চাই, যাতে আবার আমাদের বিতাড়িত না করে। তবে শঙ্কা হলো রাখাইনে এখনও যুদ্ধ চলছে। সেখানে কীভাবে যাবো? আমাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে, সেটি আগে পরিষ্কার করে জানাতে হবে জান্তা সরকারকে। এ ছাড়া আমাদের কিছু শর্ত আছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, নাগরিকত্ব দিতে হবে, ভিটেমাটি ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ দিতে হবে।
আশ্রয়শিবিরে বাসিন্দা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এতো বছরের মধ্যে জান্তা সরকার শুধু এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার তথ্য বাছাই শেষ করে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছে, এটি চিন্তার বিষয়। এতোদিন পর কেন মাত্র এক লাখ ৮০ হাজার নিয়ে যাওয়ার কথা বলছে, এটি আমাদের কাছে পরিষ্কার না। এখানে সংশয় আছে। বর্তমানে নতুন-পুরোনো মিলে ১৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছে বাংলাদেশে। তবে কমবেশি হতে পারে। বাকিদের কী হবে? আর যদি দফায় দফায় নিয়ে যাওয়ার কথা তারা ভাবে তাহলে তো ৫২ বছরের বেশি সময় লাগবে সব রোহিঙ্গাকে নিতে। আরেকটি বিষয় হলো আমাদের কোথায় নিয়ে রাখবে, সেটি কিন্তু জানায়নি তারা। তিনি আরও বলেন, রাখাইন রাজ্যে ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টি এখন আরাকান আর্মির দখলে। সেখানে আসলে কীভাবে যাওয়া সম্ভব আমার বুঝে আসছে না। তবে আমরা ফিরতে চাই সেখানে। বিতাড়িত হতে চাই না। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের এটাই অনুরোধ, রোহিঙ্গাদের বিপদের দিকে ঠেলে দেবেন না।
সর্বশেষ ৬ এপ্রিল মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির অধিকৃত রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপসহ আশপাশের এলাকায় নতুন করে গোলাগুলি ও সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে। গত কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। সংঘাতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন সদস্য হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও