• বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা : সপ্তাহব্যাপী সাংগ্রাই উৎস‌ব উদ্বোধন

প্রভাত রিপোর্ট / ৪ বার
আপডেট : রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

প্রভাত সংবাদদাতা,বান্দরবান : বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব সাংগ্রাই। এ উপলক্ষে রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে স্থানীয় রাজার মাঠ থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালির মাধ‌্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি। র‌্যালিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএসমং মারমা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা সুলতানা খান হীরামনিসহ বিভিন্ন দফতর ও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এই সময় মারমা, চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, ত্রিপুরাসহ বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি পাহাড়ি সম্প্রদায়ের আদিবাসী নারী-পুরুষরা নিজস্ব বিভিন্ন পোশাক ও ঐতিহ্যবাহী পরিচ্ছদ নিয়ে র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে বয়স্ক পূজার আয়োজন করা হয়।
নতুন বছরকে বরণ এবং পুরাতন বছরের বিদায়কে ঘিরে পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তাসমূহ নিজস্ব সামাজিক ঐতিহ্য নিয়ে সমন্বিতভাবে সাংগ্রাই উৎসব পালন করে থাকে।
মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাইং, ম্রো সম্প্রদায় চাংক্রান, খেয়াং সম্প্রদায় সাংগ্রান, চাকমা সম্প্রদায় বিজু, তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় বিষু ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় বৈসু, এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এই উৎসবকে সমষ্টিগতভাবে বৈসাবি বলা হয়। বান্দরবানে মারমাদের সাংগ্রাইয়ের মূল আকর্ষণ জলকেলি উৎসব। সকল পাপাচার ও গ্লানি ধুয়েমুছে নিতে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটানো উৎসবে মেতে ওঠে। পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণের জন্য মূলত এই উৎসব।
পুরাতন বছরের সব গ্লানি, দুঃখ ,বেদনা ধুয়েমুছে নতুন বছর যাতে সুন্দর এবং স্বাচ্ছন্দ্য হয় সে জন্যই এসব প্রয়াস। এই উৎসব শুধু পাহাড়িরা নয় বাঙালিরাও নানাভাবে পালন করে থাকেন। সাংগ্রাই উৎসবটিকে দেখার জন্য বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বহু পর্যটকের আগমন ঘটে।
বান্দরবান সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদ সভাপতি চুনুমং মারমা জানান, আজ রবিবার সকাল ৭টায় ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠ থেকে সাংগ্রাই বর্ণাঢ্য র‍্যালির মাধ্যমে বর্ষবরণ উৎসব সাংগ্রাইয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ৭ দিনব্যাপী সাংগ্রাই উৎসবে রয়েছে, সমবেত প্রার্থনা, বৌদ্ধ মন্দিরে মন্দিরে ভান্তে (ধর্মীয় গুরুদের খাবার দান) ছোয়াইং দান, ৩ দিনব্যাপী জলকেলি উৎসব, পিঠা তৈরি, বৌদ্ধমূর্তি স্নান, হাজারো প্রদীপ প্রজ্বালন, বয়স্ক পূজা এবং সম্প্রদায়গুলোর নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-গানসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নানা আয়োজন। আগামী ১৮ এপ্রিল মৈত্রী পানিবর্ষণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এই সপ্তাহব্যাপী সাংগ্রাই উৎসব।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও