আজ
|| ৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ৭ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
বিজুর পাজন আপ্যায়ন: ৩২ ধরনের সবজির এই তরকারি
প্রকাশের তারিখঃ ১৩ এপ্রিল, ২০২৫
প্রভাত সংবাদদাতা, রাঙামাটি: চাকমা বর্ষবরণের বড় উৎসব ‘বিজু’। পাহাড়ি জনগোষ্ঠী চৈত্রের শেষ দিনে মূল বিজু পালন করে থাকে। এ বিজুর মূল উপাদান ‘পাজন’। পাহাড়ি বর্ষবরণের আবহমানকালের বহু ঐতিহ্যের অপরিহার্য অংশ হিসেবে চাকমা সংস্কৃতিতে টিকে আছে বিজু উৎসবের এই পাজন রান্না। রাঙামাটির ঘরে ঘরে চলছে পাজন আপ্যায়ন। কমপক্ষে ৩২ রকমের সবজি দিয়ে রান্না হয় ঐতিহ্যবাহী এ পাজন। এটি বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে রান্না করা হয়। যার মধ্যে থাকে কাঁঠাল, কলা, মুলা, মিষ্টিকুমড়া, বেতডগা, তারাসহ বিভিন্ন উপাদান। সঙ্গে থাকে বিভিন্ন প্রকার শুঁটকি।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের ধারণা, বছরের শেষ বা প্রথম দিনে এ পাজন খাবার খেলে বিভিন্ন প্রকারের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ঐতিহ্যবাহী এ খাবার পাহাড়ি-বাঙালির সবার কাছেই খুবই প্রিয়। পাজন দিয়েই দিনভর চলে অতিথি আপ্যায়ন। তাই এই দিনে সবাই কম করে হলেও সাত বাড়িতে বেড়ায় পাহাড়ি ও বাঙালিরা।
দুকূল চাকমা বলেন, ‘১২ এপ্রিল ফুল ভাসিয়ে বর্ষবিদায় দিয়ে থাকি আমরা। আর ১৩ এপ্রিল সকালে গোসল শেষে বাসার বয়স্কদের পায়ে ধরে প্রণাম করি। পরে বাড়িতে বাড়িতে বিভিন্ন রান্না করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম পাজন তরকারি। যে যত পারে সবচেয়ে বেশি সবজি দিয়ে এই পাজন রান্না করা হয়। কমপক্ষে ৩২ রকমের সবজি থাকে এতে। বিনিতা চাকমা বলেন আমরা বিশ্বাস করি, ‘সাত বাড়ি ঘুরে নানা ধরনের সবজি মিলিয়ে তৈরি এই পাজন খেলে শারীরিকভাবে সুস্থ ও রোগ-ব্যাধিমুক্ত থাকা যায়। তাই এটি এটি আমাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।’
বাড়ি বাড়ি বেড়াতে থাকা শিক্ষক রিংকু দে বলেন, ‘এই দিনে আমরা পাহাড়ি বন্ধু ও কলিগদের বাড়িতে বেড়াতে থাকি। যে বাড়িতেই যাই না কেন অবশ্যই পাজনটা খাওয়া হবেই। আরেক শিক্ষক আয়েশা আক্তার বলেন, ‘পার্বত্য এলাকায় উৎসবে আমরা সবাই সবার বাড়িতে সারা দিন ঘুরে বেড়াই। এই দিনে পাজন না খেলে চলেই না।
উৎসবের তৃতীয় দিন আগামীকাল ১৪ এপ্রিল চাকমা, ত্রিপুরারা গোজ্জাই পোজ্জা পালন করলেও ওই দিন মারমা সম্প্রদায় উদযাপন করে ঐতিহ্যবাহী পানি খেলা উৎসব। আগামী ১৯ এপ্রিল রাঙামাটির স্টেডিয়ামে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই পানি খেলার মাধ্যমে শেষ হবে পাহাড়ের বর্ষবিদায় ও বরণ উৎসব।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.