প্রভাত রিপোর্ট: মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর গড়ানোর আগে ক্রিকেটপাড়া ও ঢাকার ক্রীড়াঙ্গনে তোলপাড়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) উপস্থিত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) টিম! দুদকের দুই সহকারী পরিচালক আল আমিন ও মাহমুদুল হাসানসহ ৩ সদস্যর দল আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে বিসিবিতে গিয়েছেন। হঠাৎ কেন কী কারণে এমন অভিযান দুদকের? কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই কি এ অভিযান? বিসিবিতে নতুন করে কি কোনো অর্থনৈতিক অস্বচ্ছতার ঘটনা ঘটেছে? ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে নানা কৌতূহলি প্রশ্ন। এর মধ্যে বিসিবি ও শেরে বাংলার চারপাশে ছড়িয়ে পড়লো খবর- বিপিএলে টিকিট বিক্রি নিয়ে অভিযোগ আছে দুদকের কাছে। বিপিএলের সর্বশেষ আসরে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বাধিক টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। টিকিট বিক্রি নিয়ে খালি চোখে তেমন কোনো দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয়নি গণমাধ্যমে। তাহলে বিপিএল টিকিট বিক্রি নিয়ে কী অভিযোগ? পরে দুদক কর্মকর্তাদের কথায় বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। তারা কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই বিসিবিতে এসেছেন।
দুদক সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, আমাদের কাছে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। তিনটি অভিযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন তিনি বলেন, ‘তৃতীয় বিভাগ বাছাই লিগে এবার ৬০টি দল অংশ নিয়েছে। আগে ২-৩ বা সর্বোচ্চ ৪ দলের লিগ হতো। এখানে হয়তো কোনো কারণ আছে। আমরা কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি, এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা বোর্ডের কোনো প্রভাব ছিল কিনা দেখার জন্য। এমনিতেই বোঝা যাচ্ছে, আগে হয়তো অংশগ্রহণের স্বাধীনতা ছিল না। কোনো চাপ ছিল যে কারণে দলগুলো আসত। আমরা বিস্তারিত যাচাইবাছাই করে বুঝতে পারবো এখানে কী অসঙ্গতি ছিল। আগে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ নিয়ে টিকেটের ব্যাপারে চুক্তি করা হতো। তারা টিকেট বিক্রি করে বিসিবিকে একটা অংশ দিত। গত ৩-৪ আসরে বিসিবি নিজ থেকে টিকেট বিক্রি করছে। যার প্রেক্ষিতে একাদশ আসরে আমরা দেখেছি, ১৩ কোটি টাকা আয় হয়েছে। আট বছরে যেখানে ১৫ কোটি, এক বছরেই ১৩ কোটি। রেকর্ডপত্র আমরা পেয়েছি। বিস্তারিত যাচাই করলেই বোঝা যাবে কী অসঙ্গতি এখানে।’
এছাড়া মুজিব শতবর্ষের ব্যয়ের হিসেবে কিছু অস্বাভাবিকতা আছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো যাচাইবাছাই করে আমরা আমাদের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন দাখিল করবো। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।’
হঠাৎ বিসিবিতে দুদক। এ ব্যাপারে বিসিবির অবস্থান কী? তাৎক্ষণিকভাবে বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন এ প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুদকের পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, এসবের ব্যাপারে আমাদের কাছে যত কাগজপত্র আছে, সব বিভাগকে সেগুলো দুদকের কাছে দিয়ে সহযোগিতার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। এখন যেহেতু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, তাই এর বেশি কিছু বলা উচিত হবে না।’