আজ
|| ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
গাজা ফিলিস্তিনিদের, সতর্ক করে দিলো জার্মানি
প্রকাশের তারিখঃ ১৭ এপ্রিল, ২০২৫
প্রভাত ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড স্থায়ীভাবে দখলের বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়েছে জার্মানি। মূলত ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গাজার তথাকথিত নিরাপত্তা অঞ্চলে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান করার কথা বলার পর জার্মানি ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিলো। এমনকি গাজা ফিলিস্তিনিদের এলাকা বলেও মন্তব্য করেছে দেশটি। বুধবার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজা নিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজের সাম্প্রতিক ঘোষণার পর জার্মানি সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, তারা গাজার স্থায়ী দখল মেনে নেবে না। বুধবার বার্লিনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান ওয়াগনার বলেন, গাজা ফিলিস্তিনিদের অঞ্চল এবং জার্মান সরকার গাজার স্থায়ী দখল ও ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে সেখান থেকে বিতাড়নের কৌশলকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে। তিনি আরও বলেন, “জার্মান পররাষ্ট্রনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্যে আলোচনার মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে পৌঁছানো, যাতে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিরা পৃথক দুটি রাষ্ট্রে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বসবাস করতে পারে। এর আগে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ঘোষণা করেন, গাজার নিরাপত্তা অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনারা অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান করবে, যা হবে শত্রু এবং ইসরায়েলি বসতিগুলোর মাঝে বাফার জোন। তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী এবার আগের মতো দখল করা এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে না। বরং, উত্তর গাজায় বাফার জোন আরও সম্প্রসারণ করা হয়েছে, যেখানে লাখো ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করে এই অঞ্চলকে ইসরায়েলি নিরাপত্তা অঞ্চল-এ পরিণত করা হয়েছে।
কাটজ বলেন, এই পদক্ষেপগুলো মূলত হামাসের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশলের অংশ, যাতে তারা বন্দিমুক্তির চুক্তি মেনে নিতে বাধ্য হয়। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, যতক্ষণ হামাস ইসরায়েলের শর্ত মানবে না, ততক্ষণ ইসরায়েলি সেনা অভিযান চলতেই থাকবে এবং হামাসের কার্যক্রম ও অবকাঠামো ধ্বংস করা হবে। সম্প্রতি, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উত্তরে বেইত লাহিয়া, বেইত হনুন, ও জাবালিয়ায় এবং দক্ষিণের রাফাহ শহর ও খান ইউনুসের কিছু অংশ থেকে মানুষকে জোরপূর্বক সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
গত শনিবার, সেনাবাহিনী ঘোষণা করে, তারা রাফাহ শহর ঘিরে ফেলেছে এবং শহরটিকে খান ইউনুস থেকে বিচ্ছিন্ন করতে মোরাগ করিডোর তৈরি করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল আবার গাজায় হামলা শুরু করে। যার ফলে জানুয়ারির ১৯ তারিখে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তি ভেঙে পড়ে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের দমন-পীড়নে গাজায় এখন পর্যন্ত ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এই হামলার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত নভেম্বর মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইসরায়েল এখন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.