আজ
|| ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
মেসিকে ‘মেসি’ বানিয়েছেন দুই কোচ পেপ গার্দিওলা ও লিওনেল স্কালোনি
প্রকাশের তারিখঃ ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
প্রভাত স্পোর্টস: জাতীয় দল ও ক্লাব মিলিয়ে মূল দলে লিওনেল মেসির ২১ বছরের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কোচ কারা? অবশ্যই পেপ গার্দিওলা ও লিওনেল স্কালোনি। প্রথমজন ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত বার্সার কোচ ছিলেন। সে সময় মেসি, জাভি হার্নান্দেজ, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাদের নিয়ে বিশ্বসেরা বানিয়েছিলেন কাতালান ক্লাবটিকে। মেসির আজ এতটা তারকাখ্যাতির ভিত ছিল গার্দিওলার সে ‘ড্রিম টিম’–এর খেলার ধরন, যেখানে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ছিলেন কেন্দ্রবিন্দু।
আর স্কালোনি? জাতীয় দলের জার্সিতে মেসির কিছুই না জেতার খরা কাটিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন কোচ। ২০১৮ বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন। এরপর ২০২১ ও ২০২৪ কোপা আমেরিকা জয়ের পাশাপাশি মেসিদের জেতান ২০২২ বিশ্বকাপ। সে বছর তাঁর অধীনে ‘ফিনালিসিমা’ জিতেছে আর্জেন্টিনা। এসব শিরোপায় ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে পরিপূর্ণতা পেয়েছে মেসির ক্যারিয়ার।
আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্ডার কিকে উলফের অনুষ্ঠান ‘সিম্পলি ফুটবল’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ দুই কোচ নিয়ে কথা বলেন মেসি। বর্তমানে ম্যানচেস্টার সিটি কোচের দায়িত্বে থাকা গার্দিওলাকে নিয়ে ইন্টার মায়ামি তারকা বলেছেন, ‘পেপ গার্দিওলা অন্য গ্রহের। তিনি আলাদা। তিনি যা দেখেন, সবার চোখে তা পড়ে না। তিনি ফুটবল পাল্টেছেন।’ গার্দিওলা ফুটবল খেলার ধরন পাল্টেছেন, সে কথা অনেক বিশ্লেষকও বলেন। বার্সেলোনার কোচ থাকতে তাঁর ‘তিকিতাকা’ দর্শন ভীষণ প্রভাব ফেলেছিল ফুটবল বিশ্বে। অনেক ক্লাব থেকে জাতীয় দল গার্দিওলার দর্শন অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছিল। বার্সাকে ‘ট্রেবল’ জেতানো এ কোচ বায়ার্ন মিউনিখ ও সিটির কোচ হিসেবেও অনেক প্রভাব ফেলেছেন ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে। সর্বকালের অন্যতম সেরা কোচ হিসেবে বিবেচিত গার্দিওলা এবার অবশ্য সিটিকে প্রত্যাশিত সাফল্য এনে দিতে পারেননি। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকে বাদ পড়ার পাশাপাশি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ টেবিলেও হাতে ৬টি ম্যাচ রেখে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সঙ্গে ২১ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে পাঁচে সিটি।
স্কালোনির বিষয়ে আর্জেন্টিনা দলে তখনকার পটভূমি বুঝিয়েছেন মেসি। ২০১৮ বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে আর্জেন্টিনা বাদ পড়ার পর হোর্হে সাম্পাওলির জায়গায় কোচ হন স্কালোনি। এর পর থেকে আর্জেন্টিনাকে সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হয়েছে। মেসির ভাষায়, ‘শুরুতে এটা কঠিন ছিল। সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হয়েছে।’ মেসি এরপর বলেন, ‘একটি প্রজন্ম, একটি যুগের শেষ তখন। খুব বেশি পরিচিত নন, এমন খেলোয়াড়েরা উঠে এসেছে। কোচ খুব বুদ্ধিমান। সেটা শুধু বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়ে নয়, পাশাপাশি তিনি যেভাবে দলটাকে তৈরি করেছেন, যেভাবে সামলেছেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি অসাধারণ কাজ করেছেন। খুবই শক্তিশালী এবং একতাবদ্ধ একটি দল বানিয়েছেন। আর্জেন্টিনা দলে স্কালোনির অবদানের বিষয়ে মেসি আরও ব্যাখ্যা করেন, ‘২০১৯ কোপা আমেরিকার পর আমরা একতাবদ্ধ থেকে শুরু করি, একটু একটু করে আমরা নিজেদের খেলাটা খুঁজে পেতে থাকি। আমরা ব্রাজিলের কাছে হেরে ছিটকে পড়লেও শ্রেয়তর ফুটবল খেলেছি। ম্যাচে যা কিছু ঘটেছিল, ফল অন্য রকমও হতে পারত (ব্রাজিলের বিপক্ষে সেমিফাইনালে রেফারিং নিয়ে বিতর্ক)। তখন মনে হয়েছিল আমাদের কাছ থেকে কিছু একটা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
মেসি জানিয়েছেন, একটার পর একটা ম্যাচ জিতে তাঁরা আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন, ‘দলের পাশাপাশি কোচিং স্টাফও একটা দল হিসেবে বেড়ে উঠেছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি এবং তারা যেটা করেছে, সেটা অসাধারণ। তখন এটা সহজ ছিল না। তিনি (স্কালোনি) যেভাবে জাতীয় দলে এসেছেন, সেটাও কঠিন ছিল। তিনি তাদের সমর্থন দিয়েছেন এবং যা যা করার দরকার, সবই করেছেন। সত্যি বলতে, এটা দারুণ ব্যাপার।’
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.