জাহাঙ্গীর আলম শেখ,গাজীপুর : ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম এলাকা মাওনা চৌরাস্তা। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর পৌরসভায় অবস্থিত মাওনা চৌরাস্তার আশেপাশে অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। এ কারণে মাওনা চৌরাস্তা সড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । এলাকার শিল্প শ্রমিক ও স্থানীয়দের দৈনন্দিন সকল চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের বড় বড় মার্কেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। এর পাশাপাশি অসংখ্য বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও ময়লা আবর্জনা ফেলার সঠিক বন্দোবস্ত আজ পর্যন্ত হয়নি। ফলে বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সব ময়লা আবর্জনা মাওনা চৌরাস্তা ফ্লাইওভারের নিচে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। এছাড়াও আশেপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য যত্রতত্র রাস্তায় ফেলে রাখা হচ্ছে। এরফলে রাস্তার পাশে থাকা ড্রেনে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা আবর্জনায় বন্ধ হয়ে গেছে।
এলাকাবাসির অভিযোগ, বর্ষার শুরুতেই সামান্য বৃষ্টিতে বৃষ্টির পানির সাথে সমস্ত ময়লা আবর্জনা মিশে গিয়ে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল ও জনগণের চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে । এছাড়াও পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে মানুষের মলসহ আশেপাশে খাবার হোটেলগুলোর পচা খাবার ও নানা প্রকার পোকামাকড়। এতে করে দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা দায় হয়ে পড়েছে। রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে নাকে রুমাল দিয়ে। এছাড়াও এই পানি মাড়িয়ে চলতে হচ্ছে মাওনা চৌরাস্তা আসা দৈনিক চাহিদা পূরণ করার জন্য হাজার হাজার মানুষকে। এতে করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে চলাচলকারীদের । হতে পারে চর্মরোগসহ নানা প্রকার রোগ ব্যাধি । এ ব্যাপারে মাওনা চৌরাস্তা আলহেরা হাসপাতালের মালিক ডাক্তার আবুল হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত হাসপাতালে চর্ম রোগীর সংখ্যা বাড়ছে চুলকানি নানা প্রকার ঘা এবং ভাইরাস ফাঙ্গাসজনিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বাচ্চারা।
এই সমস্ত ড্রেন ও ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার লক্ষ্যে শ্রীপুর পৌরসভার কোন ভূমিকা দৃশ্যমান নেই বলে জানিয়েছেন মাওনা চৌরাস্তার ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে খাবার হোটেল ব্যবসায়ী কিতাব আলী বলেন, দীর্ঘদিন মাওনা চৌরাস্তায় খাবার হোটেল ব্যবসা করে আসছি আমাদের হোটেলের সমস্ত পানির লাইন এই ড্রেনগুলোতে দেয়া রয়েছে। ড্রেনগুলো সঠিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করার কারণে ড্রেনের পানি ভরাট হয়ে উচকে রাস্তায় চলে আসে। এতে করে সারা বছরই রাস্তায় যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচলের বিঘ্ন ঘটে।
মাওনা চৌরাস্তা হাইওয়ে থানার ওসি বলেন, এই পানির কারণে রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে রাস্তা পরিষ্কার রাখতে যানজট মুক্ত রাখতে আমাদের লোকবলের অনেক কষ্ট হয়। তারপরেও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গাটিকে যানজট মুক্ত রাখার জন্য।
বাস চালক আবুল হোসেন বলেন, আমরা এখানে দুর্গন্ধের জন্য গাড়ি নিয়ে দাঁড়াতে পারি না । যাত্রীদের এই সমস্ত পানি মাড়িয়ে গাড়িতে উঠতে হয় এবং আমরা সঠিকভাবে গাড়ি রাস্তার পাশে না নিয়ে যেতে পারার কারণে রাস্তার মাঝখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে যাত্রী ওঠানামা করার কারণে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। এতে করে আমরা ও গাড়ির মালিকরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
৫ আগস্ট ২০২৪ এর পরে শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র না থাকার কারণে পৌরসভার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসক নিয়োগ করা থাকলেও এ সমস্ত কাজের সঠিকভাবে তদারকি না থাকায় দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অবহেলার কারণে সড়ক ময়লা পানি দিয়ে তলিয়ে যায় । এতে করে যান চলাচল ও জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এর সঠিক সমাধান চেয়েছেন মাওনা চৌরাস্তার ব্যবসায়ী ও জনগণ।
শ্রীপুর পৌর বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারী বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিদি না থাকার কারনে পৌর সভার জনগনণের সঠিক সেবা নিশ্চিত হচ্ছে না,তাই এ সমস্ত দায়িত্ব জনগণের সাথে সম্পৃক্ত ব্যাক্তিদের দেয়া হলে সঠিক সমাধান হবে আশা করি।