প্রভাত রিপোর্ট: রাজধানী ঢাকার অন্যতম গণপরিবহন সিএনজিচালিত অটোরিকশা। পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন সুলভ করার অংশ হিসেবে ২০০১ সালে বেবিট্যাক্সি (ডিজেল বা পেট্রলচালিত থ্রি-হুইলার) তুলে দিয়ে রাস্তায় নামানো হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা।
রাজধানী ঢাকার অন্যতম গণপরিবহন সিএনজিচালিত অটোরিকশা। পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন সুলভ করার অংশ হিসেবে ২০০১ সালে বেবিট্যাক্সি (ডিজেল বা পেট্রলচালিত থ্রি-হুইলার) তুলে দিয়ে রাস্তায় নামানো হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা। ২০০৭ সালে নীতিমালা করে ঢাকায় বাহনটির সংখ্যা ১৩ হাজারে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। ২০১২ সালে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ হাজার ৬৯৬-তে উন্নীত করা হয়। এক যুগ পর ঢাকায় আবার সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক-চালকদের দাবি, সংখ্যাটি বাড়িয়ে এবার ৪০ হাজার করা হোক। যদিও সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, যৌক্তিক হারে সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে।
ঢাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীতে সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলারের প্রকৃত চাহিদা বিবেচনা করে সিলিং সংখ্যার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম মহানগরের জন্যও সিলিং সংখ্যার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। বিআরটিএ চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিক ওই চিঠিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
ঢাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা বাড়াতে মালিক-চালকদের যুক্তি হলো চাহিদা বাড়লেও বাহনটির সংখ্যা বছরের পর বছর একই রয়ে গেছে। ২০০১-০২ সালে ঢাকার আয়তন ছিল ১২৯ বর্গকিলোমিটার। এখন তা ২৭০ বর্গকিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে জনসংখ্যা ৮০ লাখ থেকে দুই কোটিতে উন্নীত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ঢাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সিলিং ৪০ হাজারে উন্নীত করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন তারা।
ঢাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা বাড়বে কিনা তা নির্ধারণের দায়িত্ব ঢাকা মহানগর যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির। এ কমিটির একটি সূত্র বণিক বার্তাকে জানিয়েছে, মালিক-চালকদের দাবি অনুযায়ী সিএনজির সিলিং ৪০ হাজার হয়তো করা হবে না। তবে এটা যৌক্তিক পর্যায়ে বাড়ানো হতে পারে। এক্ষেত্রে যাত্রীদের চাহিদা, রাস্তার ধারণক্ষমতা, ঢাকায় বাহনটি চলাচলের সক্ষমতাসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ডিটিসিএকে পাঠানো এক চিঠিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক ও চালক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সিলিং ৪০ হাজার করার দাবি করেন। চট্টগ্রাম মহানগরেও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ানোর দাবি উঠেছে। এর বাইরে রাইড-শেয়ার কোম্পানি ওভাই সলিউশন লিমিটেড ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে সব মিলিয়ে আট হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা তাদের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে নিবন্ধন দেয়ার অনুরোধ করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি, ডিটিসিএসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে, ঢাকা মহানগরীতে সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলারের প্রকৃত চাহিদা বিবেচনা করে সিলিং সংখ্যার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে বলে মত দেয়া হয়েছে মহাসড়ক বিভাগের চিঠিতে।
বিষয়টি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে মন্তব্য জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘ঢাকায় দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য থ্রি-হুইলারজাতীয় যানবাহনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এর আলোকে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা যৌক্তিকীকরণ করা হবে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছাড়াও ঢাকার জন্য বিদ্যুচ্চালিত অটোরিকশা প্রবর্তনের একটি উদ্যোগ সরকারের রয়েছে জানিয়ে এ উপদেষ্টা আরো বলেন, ঢাকার জন্য উপযোগী, নিরাপদ ও যাত্রীবান্ধব বিদ্যুচ্চালিত অটোরিকশা আমরা অনুমোদন দেয়ার পরিকল্পনা করছি। এরই মধ্যে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে ঢাকা থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উঠিয়ে দিয়ে যেন এ ধরনের নিরাপদ বাহন প্রবর্তন করা যায়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।