প্রভাত সংবাদদাতা, খুলনা: অচলাবস্থা কাটেনি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট)। সবশেষ সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার (৪ মে) থেকে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও পাঠদানে ফেরেননি শিক্ষকরা। পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সকালে শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন কুয়েট উপাচার্য।
শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষক লাঞ্ছিতকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না তারা। এ অবস্থায় কবে নাগাদ ক্লাস শুরু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এদিকে দীর্ঘদিন ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকায় লেখাপড়ায় পিছিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সেশনজটেরও আশঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
কুয়েট প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার (৪ মে) থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ক্লাস শুরুর জন্য শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি লিখেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন কর্মসূচিতে অটল রয়েছেন। ফলে আজ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, ভিসিসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছনাকারীদের সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরব না। গতকাল আমরা আমাদের সিদ্ধান্তের কথা নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ভিসিকে জানিয়ে দিয়েছি। তিনি আজ আমাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছেন। এদিকে ৭৪ দিন একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর ক্লাসে ফিরতে উন্মুখ হয়ে বসে আছেন শিক্ষার্থীরা। ইতিমধ্যে আবাসিক হলগুলো ভরে গেছে শিক্ষার্থীদের পদচরণায়।
কুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের দপ্তর ও ১৬টি বিভাগের প্রধানের দপ্তরে লিখিত চিঠি দিয়েছি। আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে বিদ্বেষমূলক কোনো আচরণে যেতে চাই না।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি কুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে কুয়েটে অচলাবস্থা চলছে। এরপর শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলন ও আমরণ অনশনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ এপ্রিল উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার।
গত ১ মে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।