আজ
|| ৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ৭ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
জমে উঠেছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের রান্নার শো নাইট বাইট
প্রকাশের তারিখঃ ৪ মে, ২০২৫
প্রভাত স্পোর্টস : পর্বটার নামই জমজমাট: ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ মিটস চিকেন কষা’।’ মানে, মুরগির কষা মাংস এবার পাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ছোঁয়া। দেখতে দেখতে অবশ্য দর্শকের মনে হবে, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ছোঁয়া নয়, ত্রিনিদাদিয়ান ছোঁয়া বললেই ভালো হতো। বলা হচ্ছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের রান্নার শো ‘নাইট বাইট’–এর কথা। আইপিএল তো অনেক আগেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। সেখানে এখন শুধু ব্যাট-বলের খেলাই হয় না, নাচ-গান, চিয়ার লিডার, আফটার ম্যাচ পার্টি মিলিয়ে একেবারে বিনোদনের ফুল প্যাকেজ। সেখানে নিত্যনতুন দর্শককে বিনোদন দিতে নানা উপকরণ যোগ হচ্ছে।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের ইউটিউব চ্যানেলে রান্নার শো ‘নাইট বাইট’ও তেমনই একটি। যেখানে কলকাতার খেলোয়াড়েরা কী খান, যেসব শহরে খেলতে যান সেখানকার খাবার কেমন, বিভিন্ন ধরনের রান্না কীভাবে করতে হয়...এসব দেখানো হয়। খেলোয়াড়দের সঙ্গে আড্ডা আর মজার ছলে উঠে আসে ড্রেসিংরুমের অনেক গল্পও। ‘নাইট বাইট’-এর উপস্থাপক এবং রাঁধুনি কুণাল কাপুর। তো সেই নাইট বাইটের ঝাল-মসলা মাখা পর্বে এবার হাজির তিন ক্যারিবিয়ান ডোয়াইন ব্রাভো, সুনীল নারাইন ও আন্দ্রে রাসেল। যাঁদের ছক্কায় স্টেডিয়াম কাঁপে, তাঁরা এবার কড়াইয়ে খুন্তি নাড়লেন! ব্রাভো-নারাইন ত্রিনিদাদের মানুষ, রাসেল জ্যামাইকার। মূল আড্ডাটা অবশ্য ব্রাভো-নারাইনের সঙ্গেই হয়েছে কুনালের, পরে যোগ দিয়েছেন রাসেল।
সঞ্চালক কুণাল কাপুর মুরগির মাংস রান্নার শুরুতেই কয়েকবার বললেন ‘চিকেন কারি’, যেটা শুনে ব্রাভো সঙ্গে সঙ্গে শুধরে দিলেন তাঁকে, ‘না, “চিকেন কারি” নয়, বলতে হবে “কারি চিকেন”। আমি যদি আমার দেশের জাতীয় টেলিভিশনে গিয়ে চিকেন কারি বলি, তাহলে পুরো দেশ আমাদের পেটাবে।’
কেউ মনে করতে পারেন ত্রিনিদাদে মুরগির মাংসের রেসিপির নামে এমন প্রাণঘাতী কড়াকড়ি! আসলে মজা করেই বলেছেন নারাইন। শর্ষের তেল, আলু দিয়ে কুণাল চুলায় কষা মুরগি বসিয়ে দিয়ে আলাপ জুড়লেন, ‘ত্রিনিদাদে সবচেয়ে বেশি চলে কোন খাবার?’ ব্রাভো জানালেন, ‘আমাদের ওখানে একটা খাবার আছে “ডাবলস”। চানা আর ময়দা দিয়ে বানায়, অনেকটা তোমাদের ছোলার ডালের পরোটার মতো। সঙ্গে বেক অ্যান্ড শার্ক। আর রুটি। ত্রিনিদাদে গেলে ওগুলো না খেলে জীবনটাই মাটি!’ রান্না করতে করতে আড্ডা জমে উঠল। হঠাৎ প্রশ্ন এল—স্কুলে কে কেমন ছাত্র ছিলেন? ব্রাভো সোজা জানিয়ে দিলেন, বইয়ের পাতায় তাঁর রান ছিল না! নারাইনও বইয়ের ভক্ত ছিলেন না, সেটা বোঝা গেল তাঁর মাথা নাড়ায়। মানে পড়াশোনায় তিনিও ‘ডাক’ মেরেছেন!
এরপর চুলের স্টাইল নিয়ে গল্প। নারাইন জানালেন, চুলে স্টাইল করা একেবারে ছোটবেলাতেই শিখে ফেলেছিলেন। শুরুতে নাকি বাড়ির লোকেরা ভুরু কুঁচকে তাকিয়েছিলেন, এসব কী বাবা! তবে এখন সেই স্টাইলই ফ্যাশন!
তারপর সিনেমার গল্প। ব্রাভো হঠাৎ বললেন, শাহরুখ খান নাকি একবার তাঁকে বলেছিলেন, ‘যদি ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সকে ট্রফি জেতাতে পারো, তাহলে সিনেমায় রোল পাবে।’ ‘চারটা ট্রফি জিতলাম’—গর্বভরে জানালেন ব্রাভো। শাহরুখ খান কেন যে তাঁকে ডাকছেন না সিনেমায়!
তারপর শুরু হলো ডিম ফেটানোর প্রতিযোগিতা, নারাইনকে সাহায্য করতে রাসেল নিজেই ঢুকে পড়লেন কিচেনে। পুরো ব্যাপারটা জমে গেল বাচ্চাদের কিচেন পার্টির মতো। আর শেষে ব্রাভো তাঁর বিখ্যাত ‘চ্যাম্পিয়ন’ নাচ দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন রান্নাঘরেও ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা কম যান না! সবশেষে জমজমাট খাওয়াদাওয়া—বাঙালি স্টাইলে রান্না করা কষা মুরগি, সঙ্গে ভাত আর পরোটা। রাসেল নিজের পকেট থেকে ম্যাজিকের মতো বের করলেন ‘ক্যারিবিয়ান হট সস’। ব্যস, মুরগির কষা মাংস শেষ মুহূর্তে পেল ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ছোঁয়া!
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.