• শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৬:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নকশা না মানা ভবনের বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে রাজউক নতুন রাজনৈতিক দলের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে কমিটি গঠন ইসির ভারতের ১৫ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাকিস্তানের ‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো’ পারফরম্যান্স সিরিজ ১৪ ৫জি উন্মোচন করতে যাচ্ছে রিয়েলমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলন : রাশেদ খাঁন চলতি মাসে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশে ২৩টি মিটিং করেছে: হাসনাত পাকিস্তানে ভারতের হামলা, সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ভীতির কোনও কারণ নাই, আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিজেদের ‘বিশ্বব্যবস্থার রক্ষক’ হিসেবে উপস্থাপন করলেন পুতিন-শি

বীজের দাম পুননির্ধারণের দাবি , আলু রপ্তানিতে ফের সুবাতাস

প্রভাত রিপোর্ট / ৬ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি আলু রপ্তানি হয় মালয়েশিয়ায়। মোট রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ যায় দেশটিতে। এছাড়া সিঙ্গাপুর, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও বাহরাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে আলু। বেশ আগে রাশিয়ায় আলু রপ্তানি হতো, তবে এখন সেভাবে ওই দেশে আলু যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৪টি দেশে রপ্তানি হয়েছে বাংলাদেশের আলু। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এবছর এখন পর্যন্ত (৫ মে) ৪৮ হাজার ১৭৭ টন আলু রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের মোট রপ্তানির চারগুণ। এ বছরের রপ্তানি এখনো চলমান। মৌসুম শেষে রপ্তানির পরিমাণ ৬০ হাজার টন ছাড়িয়ে যেতে পারে। তথ্য বলছে, গত বছর (২০২৪ সাল) আলু রপ্তানি হয় ১২ হাজার ১১২ টন, এর আগের বছরগুলোতে ছিল যথাক্রমে ৩২ হাজার ৩৯২ টন, ৬২ হাজার ৭২৬ টন, ৫১ হাজার ৭৬৩ টন এবং ৫৬ হাজার টন। বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম আলু উৎপাদনকারী দেশ। রপ্তানি করছে ২৬ বছর ধরে। একসময় রপ্তানি এক লাখ টনও ছাড়িয়েছিল। এরপর না বেড়ে বরং ক্রমান্বয়ে কমেছে। গত বছর রপ্তানি নেমেছিল মাত্র ১২ হাজার টনে। বছর ঘুরতেই চারগুণ বাড়লো আলু রপ্তানি।
এদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আলু চাষিরা । আলুর বীজের মূল্য কেজিপ্রতি ২ টাকা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার (৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- বিএডিসি আলুবীজ চুক্তিবদ্ধ চাষি ফোরামের (জামালপুর) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রুহুল আমিন মিলন, ঠাকুরগাঁও জোনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ রানা, টাঙ্গাইল জোনের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ সামছুদ্দোহা তাপস প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে আমরা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) থেকে ৪৮ থেকে ৫৪ টাকা দরে বীজ ক্রয় করেছিলাম। বীজ থেকে উৎপাদিত আলুর দর পেয়েছি ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা কেজি। অথচ বাইরে এই আলু বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। কিন্তু আমরা বিএডিসির সাথে চুক্তিবদ্ধ বলে বাইরে কোনো আলু বিক্রি করিনি। যার ফলশ্রুতিতে বিএডিসি ব্যাপক লাভবান হয়েছে।
তারা আরও বলেন, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিএডিসি ভিত্তি বীজের দাম নিয়েছে ৬০/৬২ টাকা দরে। এত উচ্চমূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক, ব্যবহার করে বীজের উৎপাদন খরচ বেড়ে অঞ্চলভেদে দাঁড়িয়েছে ৩০/৩৫ টাকায়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কিছু কিছু জোন থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে উৎপাদন খরচ দেখিয়েছে, তা চাষিদের উৎপাদিত খরচের সাথে কোনো সামঞ্জস্য নেই। এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ উৎপাদন খরচ এবং খাবার আলুর নিম্নমুখী দর দেখে এ অর্থবছরে মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ২৬/২৮ টাকা। সে বছর ৪৮/৫৪ টাকা দরে ভিত্তি বীজ কিনে দর পেয়েছি প্রতি কেজি ৩৫/৩৭ টাকা। আর এ বছর ৬০/৬২ টাকা দরে ভিত্তি বীজ কিনে দর পেলাম ২৬/২৮ টাকা। এতে চুক্তিবদ্ধ চাষিগণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এমতাবস্থায়, চুক্তিবদ্ধ চাষিদের উৎপাদন খরচের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আলু বীজের মূল্য গত অর্থবছরের চাইতে প্রতি কেজিতে দুই টাকা বেশি নির্ধারণ করার দাবি জানাচ্ছি।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, মূলত দেশে আলুর উৎপাদন ভালো হওয়া, উৎপাদন খরচের তুলনায় স্থানীয় বাজারে আলুর দাম কম থাকায় রপ্তানি বেড়েছে। এছাড়া বিশ্ববাজারে আলুর চাহিদা বৃদ্ধি, নতুন জাত উন্নয়ন, কার্গো ভাড়া কমাসহ কিছু সরকারি সুবিধার কথাও জানিয়েছেন তারা।
আলু রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জিল ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হায়দার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এবার রপ্তানি বাড়ার প্রধান কারণ আলুর দাম কমে যাওয়া। তাছাড়া এবার আমদানিকারক দেশগুলোতে প্রচুর আলুর চাহিদা রয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনার সুফলও পাচ্ছেন রপ্তানিকারকরা। পাকিস্তান সেভাবে আলু রপ্তানি করছে না এবছর। সেই অর্ডারগুলো বাংলাদেশে আসছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী পাকিস্তান। এ রপ্তানিকারক আরও বলেন, এবার অন্য বছরের তুলনায় জাহাজ ভাড়া কম। প্রতি টন আলু ২৬০ থেকে ২৮০ ডলারে রপ্তানি করা যাচ্ছে। ডলারের দাম ভালো হওয়ার কারণে মুনাফাও ভালো হচ্ছে।
বাংলাদেশ আলু রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি ও ফেরদৌস বায়োটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফেরদৌসী বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আরও প্রায় ১০ হাজার টনের বেশি আলু রপ্তানি হবে এ মৌসুমে। মালয়েশিয়ায় আরও এক মাস ও নেপালে জুলাই পর্যন্ত আলু রপ্তানি হবে।’
তিনি বলেন, ‘গত বছর বিআইডিসি ‘সানসাইন’ নামে একটি জাতের আলুর উৎপাদন বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছে। এবছর ওই আলু প্রচুর রপ্তানি হচ্ছে। জাতটির সাইজ ও রং খুব ভালো। ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘এ বছর অনেক অর্ডার রয়েছে, যেগুলো সরবরাহে রপ্তানিকারকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর সরকার এবছর আলু রপ্তানির জন্য বিআরটিসির ট্রাকগুলো বন্দরে পণ্য নিতে যাওয়ার সময় আলু বোঝাই করে নিয়ে যাওয়ার একটি ব্যবস্থা করেছে। এতে যে আলু বন্দরে ৪০ হাজার টাকা ভাড়ায় নিতে হতো, সেটা ২০-২৫ হাজারে নেওয়া যাচ্ছে। এর বড় সুফল পাচ্ছি।’


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও