প্রভাত বিনোদন : প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অনুষ্ঠিত হলো প্রতিভা অন্বেষণের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘দীপ্ত স্টার হান্ট’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে। শুক্রবার (৯ মে) রাত ১০টায় দীপ্ত টিভিতে সম্প্রচারিত হয় জমকালো এই সমাপনী পর্ব। দেশের নানা প্রান্ত থেকে উঠে আসা সেরা প্রতিযোগীরা এদিন মঞ্চে তুলে ধরেন তাঁদের স্বপ্নযাত্রার চূড়ান্ত প্রকাশ।
এবারের আসরে চ্যাম্পিয়নের মুকুট অর্জন করেছেন কিশোরগঞ্জের মিষ্টি ঘোষ এবং বরিশালের শাকিব হোসেন। প্রথম রানার্সআপ হয়েছেন যশোরের ফারিহা রহমান ও বরিশালের শফিউল রাজ। দ্বিতীয় রানার্সআপ হয়েছেন সিলেটের সানজিদা চৌধুরী ও বরিশালের হাফিজ রহমান।
প্রতিযোগিতার শুরুতে অংশ নেন তিন হাজারের বেশি প্রতিযোগী। বাছাইপর্বের নানা ধাপ পেরিয়ে বিচারকমণ্ডলী বেছে নেন সেরা দশ প্রতিযোগীকে—শফিউল রাজ, হাফিজ রহমান, শাকিব হোসেন, শিমুল বিশ্বাস, এম এস এইচ লাবন, সানজিদা চৌধুরী, নূপুর আহসান, মিষ্টি ঘোষ, ফারিহা রহমান ও শেখ ফারিয়া হোসেন। গ্র্যান্ড ফিনালের কমেডি রাউন্ডে অংশ নেন এই ১০ জন। শীর্ষ ছয় প্রতিযোগীর পরিবেশনায় ছিল নাচ, কমেডি স্কিট এবং মিউজিক ম্যাশআপ। মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন জনপ্রিয় শিল্পী সন্ধি, সভ্যতা ও কর্নিয়া। দুই বছরের বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে বিজয়ীরা কাজের সুযোগ পাবেন সিনেমা, ওয়েব ফিল্ম, ওয়েব সিরিজ ও টিভি সিরিজে। তাদের পরিচালনা ও প্রচারের দায়িত্বে থাকবে কাজী মিডিয়া লিমিটেড। সুপারস্টার হওয়ার পথে এটি তাদের জন্য হতে যাচ্ছে এক বড় পদক্ষেপ।
বিজয়ী শাকিব হোসেন বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ক্যামেরার পেছনে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে উঠে আসা শাকিব এরই মধ্যে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও। অথচ অভিনয়ের প্রতি তেমন আগ্রহ না থাকা সত্ত্বেও দীপ্ত স্টার হান্টের ফেসবুক পোস্ট দেখে নিবন্ধন করেন তিনি।
প্রথম দিনেই নার্ভাস হয়ে সিরিয়াল মিস করেছিলেন, তবুও আত্মবিশ্বাসে ভর করে পৌঁছে যান সেরা দশে। শাকিব বলেন, ‘আমি জানি আমি সেরা। ছোটবেলা থেকে স্টেজে পারফর্ম করেছি, তাই নার্ভাস হইনি। ক্যামেরার পেছনের কাজের অভিজ্ঞতা আমার অনেক কাজে দিয়েছে। বড় জায়গায় নিজেকে দেখতে চাই, সামনে-পেছনে দুই জায়গাতেই নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।’অপর বিজয়ী মিষ্টি ঘোষ স্নাতকোত্তর শেষ করে ঢাকার একটি ফ্যাশন হাউসে ডিজিটাল বিপণন বিভাগে কাজ করছেন। প্রতিযোগিতার একটি রাউন্ডে খারাপ পারফর্ম করে বাদ পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিচারকদের বিশেষ বিবেচনায় ফিরে আসেন। সেই প্রত্যাবর্তনেই বাজিমাত। তিনি বলেন, ‘আশা করিনি। ফিরে আসার পর প্রচণ্ড চাপ ছিল। আমার ওপর বিশ্বাস রেখেই আবার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সবাই এত ভালো করছিল, তাই চ্যাম্পিয়ন হতে পারব কি না, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। যখন আমার নাম ঘোষণা হলো, তখন সত্যিই বিশ্বাস করতে পারিনি—আমি চ্যাম্পিয়ন!’গ্র্যান্ড ফিনালের বিচারকের আসনে ছিলেন তারিক আনাম খান, শিহাব শাহীন এবং রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।
উপস্থিত ছিলেন দীপ্ত টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান, পরিচালক কাজী জাহিন হাসান, প্রধান নির্বাহী তাসনুভা আহমেদ, নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম, অনিমেষ আইচ ও চয়নিকা চৌধুরীসহ নাট্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের বহু গুণীজন। প্রতিযোগিতাটি প্রসঙ্গে তারিক আনাম খান বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছি। তখন মিডিয়া ছিল সীমিত, সুযোগ কম। এখন সুস্থ প্রতিযোগিতা খুব দরকার। এই ধরনের প্ল্যাটফর্ম সেই অভাব পূরণ করতে পারে।’গ্র্যান্ড ফিনালের উপস্থাপনায় ছিলেন রাফসান সাবাব ও ইসমাত জেরিন। নির্বাহী প্রযোজক ছিলেন সাইফুর রহমান এবং পরিচালনায় ছিলেন ওয়াহিদুল ইসলাম। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, শোটি দীপ্ত টিভির পাশাপাশি দর্শকেরা উপভোগ করতে পারছেন দীপ্ত প্লে এবং দীপ্ত ডিজিটালের অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও।