আজ
|| ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২০শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
পটুয়াখালী ও বরগুনা উপকূলে বাড়ছে লবণাক্ততা, কমছে কৃষিজমি
প্রকাশের তারিখঃ ১৮ মে, ২০২৫
প্রভাত সংবাদদাতা, পটুয়াখালী: বাংলাদেশ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, প্রতি বছর পানি ও মাটিতে লবণের মাত্রা বাড়ছে। পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায় প্রতি মাসে মাটি ও পানির লবণাক্ততা পরিমাপ করে সংস্থাটি। এ বছর এপ্রিল মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলার উত্তর হেউবুনিয়া এলাকায় মাটিতে লবণাক্ততার মাত্রা সব থেকে বেশি। বিষখালী নদী সংলগ্ন এই এলাকার মাটিতে লবণের মাত্রা ১৫.৫৯ ডিএস/মিটার। যা অত্যধিক লবণাক্ত জমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর পটুয়াখালী জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি লবণাক্ত কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া এলাকা। এই এলাকার মাটির লবণাক্ততার মাত্রা ৮.৭১ ডিএস/মিটার। যা মাঝারি মানের লবণাক্ত জমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় এলাকার মাটি ও পানিতে বাড়ছে লবণাক্ততার মাত্রা। গত এক দশকে লবণাক্ততার প্রভাবে নানামুখী সমস্যায় পড়েছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। বিশেষ করে কৃষি ব্যবস্থাপনায় যেমন পরিবর্তন আনতে হয়েছে তেমনি অনেক জমি হয়েছে অনাবাদি। ফলে আগে যেসব জমিতে দুই কিংবা তিনটি ফসল উৎপাদন করা যেত, তার অনেক জমিতেই এখন আমন ধান ছাড়া অন্য কোনো ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে জেলার বিভিন্ন নদীর পানি পরীক্ষার যে প্রতিবেদন উঠে এসেছে তা রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, পটুয়াখালী জেলার তেতুলিয়া নদীর দশমিনা পয়েন্টে পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা ছিল ০.৬০ ডিএস/মিটার। যা সেচ কাজের জন্য ছিল নিরাপদ। কিন্তু ২০২৫ সালে একই পয়েন্টের রিপোর্ট বলছে, এপ্রিল মাসে পানিতে লবণের মাত্রা ১.৮৫ ডিএস/মিটার। যা সেচ কাজে ব্যবহারের জন্য ক্ষতিকর।
একইভাবে জেলার গলাচিপা নদীতে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের রিপোর্ট বলছে সেসময় পানিতে লবণের মাত্রা ছিল ০.৬৯ ডিএস/মিটার যা সেচ কাজের জন্য নিরাপদ। কিন্তু ২০২৫ সালে এপ্রিল মাসে সেই একই পয়েন্টে পানিতে লবণের মাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৫৬ ডিএস মিটার। যা সেচ কাজের জন্য ক্ষতিকর।
এদিকে সাগর থেকে কিছুটা দূরে পটুয়াখালীর লোহালিয়া নদীতে ২০২৩ সালের এপ্রিলে পানিতে লবণের মাত্রা ছিল .৫৫ ডিএস মিটার যা সেচ কাজের জন্য ছিল নিরাপদ। কিন্তু ২০২৫ সালের এপ্রিলের প্রতিবেদন বলছে বর্তমানে এই নদীতে ভাটার সময় লবণের মাত্রা দাঁড়িয়েছে ১.৩৫ ডিএস/মিটার। যা সেচ কাজের জন্য ক্ষতিকর।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.