আজ
|| ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ৬ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
দিনাজপুরের গাবুড়া বাজারে দিনে দেড় কোটি টাকার টমেটো বিক্রি
প্রকাশের তারিখঃ ২৭ মে, ২০২৫
প্রভাত সংবাদদাতা, দিনাজপুর: টমেটোর জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে পরিচিত নাম দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪ নম্বর শেখপুরা ইউনিয়নের গাবুড়া বাজার। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় বেচাকেনা। প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ভ্যান, ট্রাক, পিকআপ আর মানুষে ঠাসাঠাসি থাকে বাজার। প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি টাকার টমেটো বেচাকেনা হয়।
ব্যবসায়ী ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ১০টার মধ্যে কেনাবেচা শেষ হয়। এরপর বিকাল পর্যন্ত চলে গাড়ি লোড করার কাজ। প্রতিটি ট্রাকে ৫৬০ ক্রেট পর্যন্ত লোড করা হয়। ট্রাকে করে টমেটো যায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রতি বছর মার্চ মাসের মাঝামাঝি শুরু হয়ে জুনের শেষ পর্যন্ত চলে বাজার। দেশের বিভিন্ন জেলার তিন শতাধিক পাইকারি ব্যবসায়ী আসেন। দৈনিক ৯০-১০০টি ট্রাকে করে বিভিন্ন জেলায় টমেটো যায়। তবে এবার দাম নিয়ে চাষিরা কিছুটা হতাশ। কারণ প্রতিদিন দাম ওঠানামা করছে। চাহিদা অনুযায়ী দাম বাড়ে-কমে।
সরেজমিনে গাবুড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গাবুড়ার নদীর ব্রিজ থেকে মাস্তান বাজার পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে বাজার বসে। বাজারের পাশে টিনের ছাউনি দিয়ে স্তূপ করে রাখা হয় টমেটো। বাছাই করে ক্রেটে (প্লাস্টিকের ঝুড়ি) ভরেন শ্রমিকরা। সেগুলো ট্রাকে করে পাঠানো হয় বিভিন্ন জেলায়।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন সকাল থেকে ৮০-৯০ ট্রাক টমেটো বেচাকেনা হয়। কোনও কোনও দিন ১০০ ট্রাকও বিক্রি হয়। যেদিন বাজারে বেশি আসে, সেদিন দাম কম থাকে। যেদিন কম থাকে, সেদিন দাম বেশি থাকে। এমনও হয়, কোনোদিন প্রতি মণ বিক্রি হয় ৩৫০-৫০০ টাকা। আবার কোনোদিন বিক্রি হয় তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। সব মিলিয়ে দিনে প্রায় দেড় কোটি টাকার বিক্রি হয়। চাষিরা বলছেন, এবার উৎপাদন খরচ বেশি হলেও গত বছরের তুলনায় দাম কম। প্রতিদিন বাজার ওঠানামা করায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. আনিছুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চলতি বছর জেলায় ৮৬৫ হেক্টর জমিতে নাবি জাতের টমেটো আবাদ হয়েছে। যেখান থেকে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ফলন হবে বলে আশা করা যায়। ফলন ভালো হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা দাম নিয়ে কিছুটা হতাশ হলেও এখন বেড়েছে। টমেটোর নতুন জাত চাষ করতে বলা হচ্ছে কৃষকদের। যাতে আগামীতে আরও লাভবান হন। সংরক্ষণের জন্য হিমাগার ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। যদি পাস হয়, টমেটো নষ্ট হবে না, কৃষকরা ভালো দাম পাবেন।’
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.