• বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন

বাগেরহাটে জনবল সংকটে বিএডিসির তিন প্রতিষ্ঠান, সেবা বঞ্চিত কৃষকরা

প্রভাত রিপোর্ট / ১৩ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫
filter: 0; fileterIntensity: 0.0; filterMask: 0; hdrForward: 0; brp_mask:0; brp_del_th:null; brp_del_sen:null; delta:null; module: photo;hw-remosaic: false;touch: (-1.0, -1.0);sceneMode: 2;cct_value: 0;AI_Scene: (-1, -1);aec_lux: 0.0;aec_lux_index: 0;HdrStatus: auto;albedo: ;confidence: ;motionLevel: -1;weatherinfo: null;temperature: 39;

হাসিবুর রহমান,বাগেরহাট : বাগেরহাটে চরম জনবল সংকটে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) তিন প্রতিষ্ঠান।কৃষকদের বীজ, সার ও সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই ভুগছেন চরম জনবল সংকটে। এর সাথে রয়েছে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে অনিহা, স্বেচ্ছাচারিতা ও সেবা প্রদানের নামে উৎকোচ গ্রহনের প্রবনতা। যার ফলে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
বিএডিসি সূত্রে জানাযায়, বাগেরহাটে বিএডিসির তিনটি প্রতিষ্ঠান বিএডিসি-সেচ, বীজ ও সার কাজ করে।বিএডিসি সেচ বিভাগে ১৬টি পদের মধ্যে ১১টি পদই শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে উপ-সহকারী প্রকৌশলী, মেকানিক বা সহকারী মেকানিক, অফিস সহায়ক, গাড়ি চালক ও পিয়োন/দারোয়ানের পদ শূন্য রয়েছে। যার ফলে জনগণকে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন এই দপ্তরের কর্মকর্তাগণ। জনবল সংকটের অযুহাতে নিজেদের খনন করা খাল, চলমান কাজ ও কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শণেও যান না কর্মকর্তাগণ। সেচ সুবিধা প্রদান ও কৃষকদের ভাড়ায় স্যালো মেশিন পাওয়ার ক্ষেত্রেও দপ্তরে আসতে হয় বার বার। অনেকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
রুহুল আমিন নামের এক কৃষক বলেন, একটি স্যালো ম্যাশিন ভাড়া নিতে কয়েকদিন এসেছি। প্রথম দিন বলা হয়েছে, স্যার নেই পরে আসেন। তিন আসার পর বলে, ভাড়া দেওয়ার মত মেশিন নাই। এভাবে হয়রানি হলে, আমরা কোথায় যাব।
খননকৃত খাল পরির্শণ ও সেচ নালা পরিদর্শন না করার কারণ জানতে চাইলে বিএডিসি সেচ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী প্রিন্স কুমার মল্লিক বলেন, যখন কাজ চলে তখন যাওয়া হয়। আবার সব জায়গায় নিয়মিত যাওয়া হয় না। লোকবলেরও সংকট রয়েছে।ঠিকাদারের কাজ ভাগাভাগির মাধ্যমে করার বিষয়টিও অস্বীকার করেন এই কর্মকর্তা।
এদিকে বিএডিসি, সার বিভাগে রয়েছে মাত্র একজন স্টোর কিপার, তাও বীজ বিভাগ থেকে প্রেশনে পাঠানো হয়েছে। ৪শ টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন গুদামে সরকারি বেতনভুক্ত একমাত্র কর্মচারী তিনি। এই গুদাম থেকে ডিএপি, টিএসপি ও এমওপি তিন প্রকারের ৬ হাজার টনের বেশি সার বিক্রি হয়। পিয়ন, নৈশপ্রহরী বা অন্যান্য কর্মচারী না থাকায় সেবা দিতে সমস্যা হয় কিনা জানতে চাইলে গুদাম রক্ষক বিশ্বজিত বলেন, আসলে অর্গানোগ্রামে কি আছে জানি না। খুলনার স্যাররা জানেন। আর এখানে বেসরকারি শ্রমিক রয়েছে, তারা অনেক কাজে সহযোগিতা করেন।
বিএডিসি বীজ বিভাগের অবস্থাও একই রকম।কম্পিউটার অপারেটর ফারুক আহমেদ একাই সামলাচ্ছেন পুরো অফিস। এই দপ্তরে ৫টি পদের মধ্যে সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, স্টোর কিপার ও অফিস সহায়কের পদ শূন্য রয়েছে।স্টোর কিপার নামে থাকলেও, দায়িত্ব পালন করছেন সার বিভাগে।যার ফলে নিয়মিত দাপ্তরিক কাজ ও কৃষকদের বীজ সেবা দিতে বেগ পেতে হয় ফারুক আহমেদকে।
তিনি বলেন, যখন ধান রোপনের মৌসুম আসে তখন অনেক চাপ থাকে। কখনও স্থানীয়ভাবে শ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হয়, আবার কখনও খুলনা অফিস থেকে কাউকে পাঠানো হয়। এভাবে কষ্ট করে অফিস চালাচ্ছি।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএডিসির প্রধান কার্যালয়ের সংস্থাপন বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ শাহিন মিয়া বলেন, একটা সময় বিএডিসির জনবল ছিল ৬ হাজার ৮শ, পরে এটাকে ৫ হাজার ২১৮ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থমন্ত্রণালয়ের স্বীকৃতিও পাওয়া গেছে। কিন্তু জনবলের গ্রেডিং-কাঠামো নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কিছু দাপ্তরিক কাজ প্রক্রিয়াধীণ রয়েছে। এসব কাজ হলে, আমরা নতুন জনবল নিয়োগ দিতে পারব। তিনি আরও বলেন, সারা বাংলাদেশেই বিএডিসির জনবল সংকট রয়েছে। বর্তমানে ২ হাজার ৭শ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে আমাদের। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে, আমরা মাঠ পর্যায়ে জনবল পদায়ন করতে পারব।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও