• রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১০:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের বড় ও দামি ফ্রিজের বেচাকেনা কমেছে কাকরাইল থেকে ‘তথ্য আপা’দের সরিয়ে দিলো পুলিশ ‘কেএনএফের ইউনিফর্ম’ জব্দের ঘটনায় কারখানা মালিক রিমান্ডে আইএফআইসি ব্যাংকের কুলিয়ারচর শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারী অজ্ঞান, হাসপাতালে ভর্তি কীভাবে পাওয়া যাবে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট, ক্রীড়া উপদেষ্টাকে বুলবুলের প্রশ্ন ‘এখনও কেন মব জাস্টিস হচ্ছে’, প্রশ্ন সেলিমা রহমানের তথ্যের সত্যতা যাচাই করে নবীন কর্মকর্তাদের কাজ করতে হবে: তথ্য সচিব সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যালে যৌথ বাহিনীর অভিযান: ৭ জনকে কারাদণ্ড কমলাপুরে যাত্রীর চাপ নেই, টিকিট চেকিংয়ে কড়াকড়ি নির্বাচন ভারতীয় এজেন্ডা, এমনটা প্রচার করা বিপজ্জনক: জোনায়েদ সাকি

বড় নামবিহীন পিএসজিই এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে

প্রভাত রিপোর্ট / ৪ বার
আপডেট : শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

প্রভাত স্পোর্টস: ২০২১–২২, ২০২২–২৩ এই দুই মৌসুমেই পিএসজিতে ছিলেন লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। সময়ের সেরা তিন তারকাকে নিয়েও এ দুই মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ার্টার ফাইনালও খেলতে পারেনি প্যারিসের ক্লাবটি। দুবারই বিদায় নেয় শেষ ষোলো থেকে। সেই পিএসজিতে এখন মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেদের কেউ নেই। ২০২৩ সালে মেসি ও নেইমার আর ২০২৪ সালে এমবাপ্পে পিএসজি ছেড়ে গেছেন। তবে বড় নামবিহীন পিএসজিই এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে। আগামীকাল মিউনিখে ইউরোপসেরার মঞ্চে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে খেলবে পিএসজি। শেষ পর্যন্ত পিএসজি চ্যাম্পিয়ন হোক বা না হোক, কোনো বড় নাম ছাড়াই যে দলটি ফাইনালে উঠেছে, এতে বিস্মিত অনেকেই। কী এমন জাদুবলে মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেবিহীন পিএসজি এতটা ভালো দল হয়ে উঠল?
২০২৪–২৫ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের শুরুটা ভালো ছিল না পিএসজির। গ্রুপে ৮ ম্যাচের চারটিতে হেরে লিগ পর্বে ৩৬ দলের মধ্যে অবস্থান ছিল ১৫তম। শেষ ষোলোয় খেলার জন্য প্লে–অফও খেলতে হয়েছে। তবে টুর্নামেন্ট যত সামনে এগিয়েছে, ততই গোছালো এবং উপভোগ্য ফুটবল খেলেছে পিএসজি। শেষ ষোলোয় প্যারিসের ক্লাবটি যাদের হারিয়েছিল, সেই লিভারপুলের ভার্জিল ফন ডাইক বলেছেন, ‘গত তিন বছরে আমি যাদের বিপক্ষে খেলেছি, এই দলটিই সেরা।’
এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির ছন্দে ফেরার বাঁকবদল লিগ পর্বেই। ২২ জানুয়ারি গ্রুপের সপ্তম ম্যাচের প্রতিপক্ষ ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। সে দিন সিটির কাছে ২–০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে ৪–২ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় পিএসজি। উসমান দেম্বেলের গোলে শুরু হয় সেই প্রত্যাবর্তন।
এরপর স্টুটগার্টের বিপক্ষে দেম্বেলের হ্যাটট্রিকে ৪-১ ব্যবধানে জিতে নকআউটে জায়গা করে তাঁরা। পরে প্লে–অফে ব্রেস্তকে, শেষ ষোলোয় টাইব্রেকারে লিভারপুলকে, কোয়ার্টার ফাইনালে আরেক ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলাকে এবং সেমিফাইনালে আর্সেনালকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে দলটি।
পিএসজির বদলে যাওয়ার দৃশ্যমান একটি উদাহরণ হচ্ছে গতিতে উন্নতি। লুইস এনরিকের দলকে আগের তুলনায় গতি–নির্ভর দেখা গেছে। পরিসংখ্যানও সে সাক্ষ্যই দিচ্ছে। এই মৌসুমে পিএসজি প্রতি ম্যাচে গড়ে ১১৭.৯৪ কিলোমিটার দৌড়েছে, যা গতবারের চেয়ে ১০ কিলোমিটার বেশি। সবচেয়ে বেশি ড্রিবল, প্রেসিং, চ্যান্স তৈরি ও পাসও পিএসজিরই। এ ছাড়া ডান উইংয়ে খেলতে অভ্যস্ত দেম্বেলেকে সেন্টার ফরোয়ার্ডে খেলানো ও আশরাফ হাকিমিকে মিডফিল্ড–মুখী করার সিদ্ধান্তও দলের আক্রমণে গতি বাড়াতে সাহায্য করেছে।
পিএসজির এই গতিময় হয়ে ওঠায় দলটির নতুন ফুটবলারদের ভূমিকা আছে। পিএসজি তাঁর ‘সুপারস্টার’ ঘরানার নীতি থেকে সরে এসে তরুণ প্রতিভা ও দলীয় বন্ধনকে গুরুত্ব দিয়েছে। সাড়ে সাত কোটি ইউরোতে কেনা রান্দাল কোলো–মুয়ানি আর ৬ কোটিতে কেনা উগার্তে খুব একটা সফল না হলেও খিচা কাভারাস্কেইয়ার সংযোজন দলটিকে এগিয়ে দিয়েছে। ২টি গোল ও ২টি অ্যাসিস্ট করেছেন নাপোলি থেকে আসা এই জর্জিয়ান উইঙ্গার। আর পুরো দলটির ভালো খেলার প্রতিটি প্রভাবককে যিনি একসুতায় গেঁথেছেন, তিনি হচ্ছে কোচ এনরিকে। ২০২৩ সালে পিএসজির দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ক্লাব কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, মেসি–নেইমার–এমবাপ্পে একসঙ্গে থাকলে তিনি চাকরিটা নিতে চাইতেন না। ততদিনে মেসি ইন্টার মায়ামিতে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন, নেইমারও চলে যাওয়ার পথে। এ দুজনকে নিয়েই ২০১৫ সালে বার্সেলোনায় চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিলেন এনরিকে। তবে এমবাপ্পেসহ তিন বড় তারকাকে কেন্দ্র করে দল গঠন করা তাঁর বিবেচনায় কার্যকর নয়। এনরিকের দর্শন হচ্ছে দলের ১১ জন ফুটবলারকেই আক্রমণে উঠতে হবে, আবার রক্ষণেও নামতে হবে। সবাইকে মাঠে কাজ করতে হবে, না করলে খেলার সুযোগ নেই।
গত এক দশকের প্রায় পুরোটা সময় পিএসজি ছিল অনেকটা খেলোয়াড় দ্বারা পরিচালিত ক্লাব। কখনো জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ, কখনো নেইমার, মেসি বা এমবাপ্পে। তারকা যা চাইতেন, সেটিই প্রাধান্য পেত। তবে সব বড় তারকা চলে যাওয়ার পর এনরিকের কঠোর শৃঙ্খলায় পিএসজি হয়ে উঠেছে একক দল। যে দল এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের খুব কাছে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও