আজ
|| ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ৫ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
গাইবান্ধায় বাঁধের বিভিন্নস্থানে ধস, গর্ত মেরামতের উদ্যোগ নেই
প্রকাশের তারিখঃ ১০ জুন, ২০২৫
মো.নজরুল ইসলাম,গাইবান্ধা : গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় গত ২০১৯ সালের শুরুর দিকে ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। প্রতি বছর বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই বাঁধ হুমকির মুখে পড়ে। এবার বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধের ৩ কিলোমিটার অংশে বাঁধ সংস্কার করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। স্থানীয় দোকানদার মোঃ বাদশা মিয়া বলেন, তবে কয়েক আগে (সামাদের বাগান) সংল্গন বিজ্রটি মাস খানেক ধসে পড়লে তারা-হুরা করে জি ও ব্যাগ দ্বারা রক্ষার চেষ্টা চলছে। যেকোনো সময় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে বাঁধের ছোট-বড় গর্তের অংশ গুলোয় যাওয়া অংশে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিতে পারে জানিয়েছে স্থানীরা।একুইনদীর প্রায় অর্ধেক ভড়েছ,
এতে করে বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতে পারে শহরের গুরুত্বপুর্ণ অংশ। বাঁধের পাশের বাসিন্দারা সবজি ব্যবসায়ী খোকা মিয়া বলেন, ভাঙা বাঁধ দিয়ে যানবাহন নিয়ে যাওয়া যায় না। তিনি আরও বলেন, বন্যার পানি আসলে ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে ঘরবাড়ি সব ভেসে যেতেপারে । বাঁধের আর এক বাসিন্দা মোঃসূজা মিয়া বলেন, বৃষ্টিতে বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙা পানি বৃদ্দি পেলে আমরা চিন্তায় থাকি।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, বন্যা থেকে গাইবান্ধা জেলাকে রক্ষা করতে মোট ২৪০ কিলোমিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৭৮ কিলোমিটার বাঁধ উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরে নির্মিত। ১৯৬২ সালে নির্মিত গুরুত্বপূর্ণ এ বাঁধ জেলার চারটি উপজেলার ভেতর দিয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ২০ থেকে ২৩ টি স্থানে মাটি সরে গর্ত দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সুন্দরগঞ্জের শ্রীপুর ইউনিয়নের গোয়ালবাড়ী এলাকায় বাঁধ বেহাল। ভারী বৃষ্টির কারণে বাঁধের মাটি সরে ফাটল দেখা দিয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের ওপর দিয়ে পথচারী ও যানবাহন চলাচল করছে। বাঁধের বেশির ভাগ জায়গায় নদীভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো মানুষ বাসকরেন।
শাহীনর্পাক এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ নরুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, বৃষ্টিতে বাঁধের মাটি ক্ষয়ে গেছে। কিন্তু বষা মৌসম এলই তারা কিছু মেরামতের কাজ করে। কিন্তু বন্য চলে গেলে আর কোন খোঁজ থাকেনা। বাঁধটির অনেক জায়গা নিচু ও সরু হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় সাইকেল-মোটরসাইকেল ছাড়া ভ্যান চলাচল করতে পারে না।
সদরের কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট গ্রামের সাদ্দাম হোসেন বলেন, নদীতে সহায়সম্বল হারানোর পর বাঁধে অনেক মানুষ আশ্রয়ে। বাঁধটি শুধু বন্যানিয়ন্ত্রণই করছে না, আশ্রয়হীন মানুষের আবাস্থল হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে; কিন্তু সময়মতো সংস্কার না করায় অনেক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধের মাটি ধসে গেছে। জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধ জেলা শহরকে রক্ষা করছে; কিন্তু দীর্ঘ দিনেও টেকসইভাবে মেরামত করা হয়নি। শুধু বন্যা এলে মাটি ও বালুর বস্তা ফেলা হয়।
এব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে শহর রক্ষা বাঁধের যেসব পয়েন্টে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে। যাতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে কোন বাঁধের আর কোনো ক্ষতি না হয়।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.