আজ
|| ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ৬ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
আন্দোলন আমাদের অহংকার, আত্মপরিচয়ের অংশ : ঢাবি উপাচার্য
প্রকাশের তারিখঃ ১ জুলাই, ২০২৫
প্রভাত রিপোর্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান- এই ঐতিহাসিক অধ্যায়গুলো একে অপরের পরিপূরক। এগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর যেকোনো অপচেষ্টা আমরা প্রতিহত করব। এসব আন্দোলনই আমাদের অহংকার, আমাদের আত্মপরিচয়ের অংশ। মঙ্গলবার (১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে (টিএসসি) আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ‘স্মরণিকা’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র ৬০ জন শিক্ষক ও ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। আজ সেই প্রতিষ্ঠান পরিণত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার এবং শিক্ষক আছেন প্রায় ২ হাজার। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ২০০টি প্রতিষ্ঠান। যেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। নিঃসন্দেহে, এটি আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা কখনো শুধু একাডেমিক পরিসরে সীমাবদ্ধ ছিল না উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১ এবং ১৯৯০-এর প্রতিটি আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ইতিহাসে গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের সংগ্রামের নতুন অধ্যায়। দেশের মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভরসা রেখেছে বলেই প্রতিটি ক্রান্তিকালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকে সাড়া দিয়েছে, রাস্তায় নেমেছে, আন্দোলন করেছে এবং অধিকার আদায় করে নিয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি জনগণের অগাধ বিশ্বাসের কারণে। তিনি বলেন, আমরা ২০২৪-এর অভ্যুত্থানকে একাডেমিকভাবে মূল্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছি। এরই অংশ হিসেবে আমাদের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি সঙ্গে যৌথভাবে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতিহাসে কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান রয়েছে। আমাদের ২৪-এর অভ্যুত্থানের সঙ্গে এই ঘটনাগুলোর একটা ঐতিহাসিক সাদৃশ্য রয়েছে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রতীক, সভ্যতা গঠনের শিকড় ও স্বাধীনতার জাগরণগাথা। আজ যে দিনটি আমরা উদযাপন করছি, তার প্রতিপাদ্য- ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’। এটি কেবল একটি স্লোগান নয়, এটি আমাদের বোধ, আমাদের নৈতিক দায় এবং আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি।
অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মই হয়েছিল বৈষম্য দূরীকরণের তাগিদে। তাই আজকের এই প্রতিপাদ্য ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় যেমন যুক্তিযুক্ত, তেমনি বর্তমান সময়ের বিবেচনায় তা অত্যন্ত উপযোগী।
আলোচনা সভায় আরও অংশ নেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু। সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দীন আহম্মদ।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.