• শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১২:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ব্যবসায়ীকে হত্যা, ২ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করলো যুবদল সব হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের বিচার দাবিতে ঢাবিতে ছাত্র ফেডারেশনের মশাল মিছিল পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে হত্যা: প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি রাজধানীতে ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে হত্যা, চট্টগ্রামে বিক্ষোভ ঢাকায় ব্যবসায়ীকে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ ঢাকায় ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ মিটফোর্ডে শতাধিক লোকের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে হত্যা এসএসসিতে ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিলো নিবিড় আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদকে অপবিত্র করেছে : আলাল ক্ষমতায় যেতে নয়, বিএনপি দেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক উত্তরণ চায় : গয়েশ্বর
হত্যাকাণ্ডের নৃশংস উন্মত্ততার পুরো দৃশ্য সিসিটিভি ফুটেজে

মিটফোর্ডে শতাধিক লোকের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে হত্যা

প্রভাত রিপোর্ট / ৫ বার
আপডেট : শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫
মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরেই ঘটে নির্মম এই ঘটনা: ছবি সংগৃহীত

প্রভাত রিপোর্ট: স্থান পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বর। বুধবার (৯ জুলাই) বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা। হঠাৎ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন এলাকায় ঘটে যায় এক ভয়াবহ ঘটনা। শতাধিক লোকের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে, পিটিয়ে ও পাথর ছুড়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মরদেহের ওপর চলে নৃশংস উন্মত্ততা।
এ হত্যাকাণ্ডের পুরো দৃশ্য ধরা পড়ে সিসিটিভি ফুটেজে। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি সোহাগকে প্রথমে নির্মমভাবে মারধর করে, পরে কুপিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর দুই যুবক তার নিথর দেহ রাস্তায় টেনে নিয়ে এসে একের পর এক লাথি, ঘুষি ও বুকের ওপর লাফিয়ে বর্বরতা চালায়। পরে তার মাথা ও শরীরের ওপর ছোড়া হয় বড় বড় পাথর।
ঘটনার সময় শত শত মানুষ আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার সদস্যরাও নীরব ছিলেন। আতঙ্কে সবাই নৃশংস দৃশ্য দেখলেও কেউ বাধা দেয়নি। নিহতের পরিবার দাবি করেছে, সোহাগকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার দোকান থেকে ডেকে নেওয়া হয়। প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ তার ব্যবসায় আধিপত্য চাচ্ছিল এবং নিয়মিত চাঁদা দাবি করছিল। সোহাগ রাজি না হওয়ায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, সোহাগ পুরান ঢাকায় পুরাতন বৈদ্যুতিক তার ও ভাঙারির ব্যবসা করতেন। ওই এলাকায় ভাঙারি ব্যবসার একটি সিন্ডিকেট ছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন সোহাগ। সেই সিন্ডিকেটের অংশীদার হতে চেয়েছিল মাহমুদুল হাসান মহিন ও সারোয়ার হোসেন টিটু। বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে মনে করছে পরিবার।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) নিহতের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির, নান্নু, রিয়াদ, টিটন গাজী ও লাকী। ইতোমধ্যে র‌্যাব ও পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে একজনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভিডিও দেখে আমরা শিউরে উঠেছি। এ ধরনের উগ্রতা সমাজের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।’
নিহতের পরিবার জানায়, ঘটনার দিন সকালে অভিযুক্ত টিটু সোহাগের বাসায় গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার আশ্বাস দিয়ে তাকে বাইরে নিয়ে যান। এরপরই ঘটে মর্মান্তিক এ ঘটনা।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে নিন্দা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। নাগরিক সমাজের মতে, প্রকাশ্যে এমন নৃশংসতার বিচার নিশ্চিত না হলে সামাজিক নিরাপত্তা আরও দুর্বল হবে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও