প্রভাত রিপোর্ট: বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এখন যে অপপ্রচার চলছে, তার পেছনে একেবারে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত রয়েছে। সেই চক্রান্ত হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করে দেওয়া। সেই চক্রান্ত হচ্ছে যে নেতা (তারেক রহমান), যিনি উঠে আসছেন, যাঁর একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তাঁকে নিশ্চিহ্ন করা। তাঁকে খারাপ জায়গায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা।
রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে লেখা একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণ হয়েছে, এমন অভিযোগ করে অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাইবার অ্যাটাক হয়েছে আমাদের ওপরে চতুর্দিক থেকে।…পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য, বিএনপিকে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এবং সবচেয়ে মারাত্মক যেটা, ফর দ্য ফার্স্ট টাইম (প্রথমবারের মতো) এবার আমাদের নেতা তারেক সাহেবের ওপরে আক্রমণ হয়েছে। আপনারা লক্ষ করেছেন নিশ্চয়ই তাঁর নাম ধরে, তাঁর কথা বলে, তাঁকে বিভিন্নভাবে মেলাইন করে, তাঁর সম্পর্কে কথা বলেছে, যেটা খুব অ্যালার্মিং (বিপজ্জনক)।’
গণমাধ্যমের চিত্র পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল দলের নেতা–কর্মীদের ‘সাইবার যুদ্ধের’ জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এখন কিন্তু মিডিয়া পাল্টে যাচ্ছে। এখন খবরের কাগজ, ইলেকট্রনিক মিডিয়া—এটাই শুধু প্রভাবিত করছে না। সোশ্যাল মিডিয়া (সামাজিক মাধ্যম) প্রচণ্ডভাবে প্রভাবিত করছে মানুষকে। অপপ্রচারের জবাব দিতে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণদের প্রবলভাবে আসা দরকার। যে অপপ্রচার চলছে, তার উত্তর সঙ্গে সঙ্গে দিতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে এত সহজে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। বিএনপি প্রতিবাদ করেছে। প্রমাণ করেছে যে বিএনপি ধ্বংসস্তূপ থেকে জেগে উঠতে জানে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) জেলে যাওয়ার পর থেকে ওনার (তারেক রহমান) সঙ্গে সরাসরি কাজ করছি। আমি দেখেছি যে তাঁর অসাধারণ একটা সাংগঠনিক দক্ষতা আছে। এটা খুব কম রাজনীতিবিদের মধ্যে আছে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বিশাল অংশকে সংগঠিত করে ফেলতে পারেন। এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের গ্রামে পৌঁছে গেছেন।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. ইসমাইল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্থ।
অনুষ্ঠানে ‘তারেক রহমান: দ্য হোপ অব বাংলাদেশ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বিএনপির পক্ষে বইটি প্রকাশ করেছে ‘জেড ম্যান প্রোডাকশন’। এই বইয়ের সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান, নির্বাহী সম্পাদক আব্দুর রহমান নূর, সহসম্পাদক রেজওয়ানুল হক, উপসম্পাদক মেহেদী আরজান। বইটি ৩২৩ পৃষ্ঠার। এ বইয়ের ১১টি অধ্যায়ে তারেক রহমানের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন; রাজনীতিতে অভিযাত্রার সূচনালগ্ন; বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ; বিএনপিকে তৃণমূল পর্যায় থেকে চাঙা করার উদ্যোগ; ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেপ্তার ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ; ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তারেক রহমানের দায়িত্ব গ্রহণ; দেশ গঠনের রূপরেখা প্রণয়নে তাঁর ভূমিকাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।