• সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন

ঢাকা শহরে ১০ জনে বসে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না: আমীর খসরু

প্রভাত রিপোর্ট / ৪ বার
আপডেট : রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “ঢাকা শহরে ১০ জনে বসে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না।” তিনি বলেন, এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার করছে, কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংস্কার না হলে তার কোনো সুফল মিলবে না। কোনো কমিশন মানুষের মনের কথা বুঝবে না। সুতরাং দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত প্রয়াত বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষের মনোজগতে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। সেটা ধারণ করতে না পারলে কোনো দল রাজনীতি করতে পারবে না। আমরাও যদি ধারণ করতে না পারি তাহলে সামনে পথ চলা কঠিন হবে। অনেকেই জিয়াউর রহমানের ছবি পদদলিত করেছে। এটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। এখন আমাদের সহনশীল রাজনীতি করতে হবে। কারও বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করলেও সম্মান দেখাতে হবে। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক কিছুই হচ্ছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন না। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনীতি হবে সহনশীল। তাদের দেশের জনগণই জবাব দেবে। রাজনীতি শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়া না। জনগণের সমস্যা বুঝা, সেটি সমাধানে নেতৃত্ব দেওয়া।
আবদুল্লাহ আল নোমানের অবদান স্মরণ করে আমীর খসরু বলেন, চট্টগ্রাম থেকে নোমান ভাইয়ের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সুসময়ে-দুঃসময়ে কর্মীদের পাশে থেকেছেন। ভয়কে উপেক্ষা করে আন্দোলনের মাঠে ছিলেন। সবশেষ দুঃসাহসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। নোমান ভাইদের মতো কর্মী বান্ধব নেতা বর্তমানে কমে গেছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

চাঁদাবাজি নিয়ে নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একটা শ্রেণি অপকর্ম করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কিছু কর্মীও বিএনপি পরিচয় দিচ্ছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করছে। এতে দলের বদনাম হচ্ছে। বিএনপির প্রতি ৮০ শতাংশ মানুষের জনসমর্থন রয়েছে। আওয়ামী লীগের ভাড়াটে লোক বিএনপির দরকার নেই। অথচ আমাদের অনেক মাঠপর্যায়ের নেতা দল ভারী করার জন্য তাদের দলে ভেড়াচ্ছে। এতে করে নির্বাচনের আগে আমাদের বদনাম হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়ে অভিযোগ পেলেই বহিষ্কার করা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির আদর্শের সঙ্গে চাঁদাবাজি যায় না। এজন্য আমরা নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি করছি। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছে জিয়া পরিবার। মানুষ এখনো বিশ্বাস করে এই পরিবারের হাতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ।

বক্তব্যে জামায়াত-এনসিপির ষড়যন্ত্র ঠেকানোর প্রতিজ্ঞা

স্মরণ সভায় বক্তব্য দেয় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তাদের বক্তব্যে ওঠে আসে জিয়াউর রহমানের হাতেগড়া দলটি নিয়ে এখন ষড়যন্ত্র চলছে। তাদের বিরুদ্ধে জামায়াত ও এনসিপির নেতারা প্রোপাগাণ্ডা চালাচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে জামায়াত-শিবির মিছিল করে বিএনপির বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে। তাদের নেতা তারেক রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছে।
বক্তারা বলেন, জামায়াত ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি। তারা বাংলাদেশের জন্ম চায়নি। শুরু থেকে বাংলাদেশের বিরোধিতা করা দলটি ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপির বিরোধিতা করছে। জনসমর্থনহীন দলটির সংগঠিত কর্মী রয়েছে। যারা সবখানে বিচরণ করেন। তারাই এখন পরিকল্পিতভাবে বিএনপির বিরোধিতা করছে। তারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে একজন শিশু উপদেষ্টা রয়েছে। তিনি সম্প্রতি আবার মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছে। এই উপদেষ্টা বিএনপির বিরুদ্ধে নানা আপত্তিকর মন্তব্য করছেন। এজন্য আমরা মনে করি, তাকে দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও