• মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
প্রধান উপদেষ্টার পেজ থেকে আর্থিক সাহায্য চেয়ে পোস্ট সমালোচনার পর সরিয়ে নেয়া হলো উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনা : পালিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় শোক কেউ নিখোঁজ থাকলে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ মা–বাবার একমাত্র ছেলেটির স্বপ্ন ছিল সেনা কর্মকর্তা হওয়ার মাইলস্টোন কলেজে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, দুই উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা বিমান বিধ্বস্তে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭, শিশু ২৫ জন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭৮ ‘মেয়েকে ছাড়া কীভাবে স্যার বাঁচবেন, কীভাবে এই শোক সহ্য করবেন?’ ‘আমি চিৎকার করে দৌড়াচ্ছি, স্যার আমাকে বলছেন, দোয়া করেন, আল্লাহকে ডাকেন’ মাহরীন চৌধুরীকে অশ্রুমাখা স্যালুট, যিনি শিশুদের বাঁচাতে জীবন দিলেন হতাহতের ঘটনায় দুপুরের পর বন্ধ থাকবে হাইকোর্টের বিচারকাজ

মা–বাবার একমাত্র ছেলেটির স্বপ্ন ছিল সেনা কর্মকর্তা হওয়ার

প্রভাত রিপোর্ট / ৪ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

প্রভাত সংবাদদাতা, রাঙামাটি: মা-বাবার একমাত্র সন্তান উক্য সাইন মারমা। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। শিক্ষক মা-বাবাও চেয়েছিলেন ছেলের এই স্বপ্ন পূরণ হোক। তাই পড়ালেখায় যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সে জন্য ছেলেকে পাঠান ঢাকায়। রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হোস্টেলে থেকে চলছিল তার পড়ালেখা। তবে উক্য সাইনের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হওয়ার নয়। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্র উক্য সাইন মারা যায়। রাত দুইটার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
উক্য সাইন মারমার বাড়ি রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের কলেজপাড়ায়। বাবা উসাইমং রাজস্থলী উপজাতীয় আবাসিক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক, মা ডেইজি মারমা বান্দরবানের রুমা উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে (বিসিপিএসসি) পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে উক্য সাইন মারমা। তার পড়ালেখার জন্য বান্দরবান জেলা শহরের বালাঘাটা এলাকায় বাসা নিয়েছিলেন তার মা–বাবা।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিমান দুর্ঘটনার সময় উক্য সাইন মারমাও সহপাঠীদের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষে ছিল। সেখান থেকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে ঝলসে গিয়েছিল। তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
উক্য সাইনের বাবা উসাইমং মারমার সঙ্গে আজ মঙ্গলবার সকালে কথা হয়। ছেলের কথা বলতেই ‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে’ বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। উক্য সাইনের চাচা থুই সা চিং মারমা জানান, উক্য সাইনের স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হবে। তাঁর মায়ের দিকের আত্মীয়দের মধ্যে সেনা কর্মকর্তা রয়েছে। সেখান থেকেই সে অনুপ্রাণিত হয়। বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা শেষে উক্য সাইনকে ক্যাডেট কলেজে ভর্তির কোচিং করার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ক্যাডেট কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়নি। তাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করা হয়। থুই সা চিং মারমা বলেন, ‘ছেলেটার মৃত্যুতে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। মা-বাবারও কেউ রইল না’।
উক্যর ফুফু হলামা চিং মারমা আজ সকালে বলেন, উক্য সাইনের মরদেহ নিয়ে সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা থেকে তার পরিবার রওনা দিয়েছে। এলাকায় তার সৎকার করা হবে।
উক্যর মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়েই শোক বিরাজ করছে। গতকাল বেলা দুইটায় প্রথমে বাঙ্গালহালিয়ায় এই দুর্ঘটনার খবর আসে। তবে প্রথমে গুজব ভেবেছিলেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু বিকেলে যখন এই ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হয় পরিবার, তখন থেকেই থমকে যায় পুরো এলাকা। রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা প্রথম আলোকে বলেন, উক্য তাঁর আত্মীয়ের ছেলে। এ ঘটনায় শুধু তাঁর এলাকা নয়, পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামে শোক বিরাজ করছে। এত অল্প বয়সে এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও