• বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম

১২০০ টাকায় ডায়ালাইসিসের লক্ষ্যমাত্রা সরকারের : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

প্রভাত রিপোর্ট / ৯৫ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট: ডায়ালাইসিসকে সহজলভ্য করতে সরকার সোনার বাংলা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুর জাহান বেগম। তিনি বলেন, লক্ষ্যমাত্রা ১২০০ টাকায় ডায়ালাইসিস। অন্তর্বর্তী-সরকারের এক বছরের স্বাস্থ্য খাতের অর্জন ও ভবিষ্যৎ সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) প্রেস ব্রিফিং করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম এতে পুরো বছরের চিত্র তুলে ধরেন। এসময় আগামীতে তাদের কাজের পরিকল্পনাও জানান।
সরকারি চিকিৎসা কাঠামোয় দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার কথা স্বীকার করে উপদেষ্টা বলেন, ৭ হাজার চিকিৎসককে সুপার নিউমারারি পদ তৈরি করে পদোন্নতি দেওয়া হবে। সেপ্টেম্বরে ৩ হাজার নতুন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। নার্সদের পোস্টিং তাদের চয়েজ অনুযায়ী অটোমেশন পদ্ধতিতে হচ্ছে, চিকিৎসকদের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি চালু করা হবে। শূন্য পদে পদোন্নতির কাজ শেষ হবে দুই সপ্তাহের মধ্যে। ডায়ালাইসিস সেবা ও হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ডায়ালাইসিসকে সহজলভ্য করতে সরকার সোনার বাংলা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রাÍ১২০০ টাকায় ডায়ালাইসিস।
হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে আগে এক শিফটে কাজ চলত, এখন দ্বিতীয় শিফট চালু হয়েছে। একই ধারা কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালেও চালু করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা চালু করার পরিকল্পনা চলছে।
জুলাই গণ-আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুর জাহান বেগম বলেন, সরকার আহত ও শহীদদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রাণপণে কাজ করেছি। অনেক প্রাণ বাঁচাতে পেরেছি, আবার কিছু প্রাণ হারিয়ে ফেলেছি, কারণ অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
মেডিকেল শিক্ষায় নৈতিকতা সংযোজনের উদ্যোগ, সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে ডায়ালাইসিস সেবা নিশ্চিতের কথা জানান। জনবল সংকট কাটাতে নতুন নিয়োগ ও বঞ্চিতদের পদোন্নতির উদ্যোগের চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় দুই ভাগে বিভক্ত ছিল অনেকে। একদল চিকিৎসা দিতে বাধা দিয়েছে। আরেক দল নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রাণপণে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। বিশ্বের ৭টি দেশ থেকে চিকিৎসক আনা হয়েছে। তার মধ্যে সিঙ্গাপুর ছাড়া সবাই নিজের খরচে এসেছেন। নেপাল সরকার ৪০টি কর্নিয়া ডোনেট করেছে, যা এই সহযোগিতার একটি বড় দৃষ্টান্ত। এছাড়া ৭৮ জন আহতকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য, আরও ২৬ জন যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন।
নুর জাহান বেগম বলেন, সরকারের নিজস্ব কোনো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নেই। তাই সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশের সহযোগিতায় রোগী পরিবহন করতে হয়েছে। আঘাতপ্রাপ্তদের পুনর্বাসনে ব্যাংককে পাঠানো হয়েছে রোবটিকস ফিজিওথেরাপির জন্য। চীন সরকার ৬২টি চিকিৎসা-সহায়ক রোবট দিয়েছে, যার মধ্যে ১৬টি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (অও) সমৃদ্ধ। এছাড়া ২৭ জনকে রোবট পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, আরও ১৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সব নাগরিক উপকৃত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বর্তমানে দেশে সরকারি ৩৭টি, বেসরকারি ৬৭টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। বেসরকারির জন্য নীতিমালা থাকলেও সরকারির জন্য ছিল না। এখন অভিন্ন নীতিমালায় পরিচালনা করা হবে। কিছু মেডিকেল কলেজকে একীভূত বা মার্জ করার চিন্তাও রয়েছে।
এছাড়া যেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আগ্রহী নয়, সেসব বিভাগে বেতন ৫০% বাড়ানো হয়েছে, আর আরও ৫০% বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
মেডিকেল শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে একটি কমিটি গঠন এবং নতুন বই প্রকাশ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য) অধ্যাপক ডা সায়েদুর রহমান, প্রেস সচিব শফিকুল আলম, স্বাস্থ্য সেবা সচিব মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব সারওয়ার আলী, স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের ডিজি আবু জাফর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি নাজমুল হোসেন।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও