প্রভাত রিপোর্ট: ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে ৩৪ হাজার ৮৯৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় মোট ৩৭ হাজার ৩৮২ জন নিহত হন। আহত হন ৫৯ হাজার ৫৯৭ জন। রবিবার (১০ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা সংস্কারে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের রূপরেখা: সরকারের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।
দেশের সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি রূপরেখার আওতায় ১৮টি প্রস্তাব দিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি বলছে, এসব সংস্কার প্রস্তাব ২০২৫ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে বাস্তবায়নের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সড়ক ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার ছাড়া প্রাণহানি ও বিশৃঙ্খলা কমানো সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর সড়ক ব্যবস্থাপনা সংস্কারে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তিন ধাপের রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, আমরা সড়ক ব্যবস্থাপনা সংস্কারের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরি করেছি। এতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি তিন ধাপে করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ সময় সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর বলেন, বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থা বহুস্তরে নৈরাজ্যের মধ্যে রয়েছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব, অপরিকল্পিত নগরায়ন, দুর্বল অবকাঠামো, সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব এবং জবাবদিহির অভাবের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি সবসময়ই বেশি থাকে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চালকদের অবহেলা ও অদক্ষতা, দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানোর চাপ, সড়কে গতিরোধকহীন দীর্ঘ অংশ, যান্ত্রিক ত্রুটি, পথচারীদের অসচেতনতা এবং আইন অমান্য করার প্রবণতা। এসব মিলিয়ে প্রতিদিনই মানুষ সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন কিংবা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকার চাইলে এখনই একটি সড়ক ব্যবস্থাপনা সংস্কার কমিশন গঠন করে প্রস্তাবিত রূপরেখার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বাস্তবায়ন করতে পারে। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার সেই উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে পারবে। রাষ্ট্রের অবহেলা এবং দীর্ঘদিনের অযত্নের কারণে সড়ক খাত আজ ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে, আর এর মাশুল দিচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এ সময় আরও ছিলেন, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ড. কামরান উল বাসেত, পরিবহন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ফেরদৌস খান, উপদেষ্টা প্রকৌশলী মো. আরিফ রাইহান, যুগ্ম সম্পাদক ড. জাহিদুল ইসলাম, সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মাহমুদ রিয়াজ, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন এক্সপার্ট পরিচালক আমিনুর রহিম ও বাংলাদেশ রোড সেফটি নেটওয়ার্কের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ একরাম হোসেন প্রমুখ।