আজ
|| ২৭শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১১ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ৪ঠা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
সোনাইমুড়ি বিএনপির পদ পেতে তদবির শুরু
প্রকাশের তারিখঃ ১৯ আগস্ট, ২০২৫
মাহফুজুর রহমান, নোয়াখালী : বিএনপির কমিটিতে পদ পেতে তদবির শুরু হয়েছে। পদ পেতে কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটিতে তদবির করছেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন ছানি ও জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার। এ পদে প্রার্থী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল কামাল। তিনি গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভোরে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে স্ট্রোক করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পদ পেতে পদপ্রত্যাশীরা নানাভাবে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন, তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। তবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা চাইছেন, যাঁরা ত্যাগী ও সৎ এবং দলের জন্য নিবেদিত, তাঁদের যেন মূল্যায়ন করা হয়।
সোনাইমুড়ীতে বিএনপির শক্ত অবস্থান থাকলেও গত ১৬ বছর দলটি চাপে ছিল। দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। নেতা-কর্মীরা মামলায় জর্জরিত ছিলেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর চিত্র পাল্টে গেছে। নোয়াখালী- ১ আসন (সোনাইমুড়ী - চাটখিল) বিএনপির নেতাকর্মীরা দুই গ্রুপে বিভক্ত দীর্ঘ বছর ধরে। দলের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার মাহাবুব খোকন। আরেকটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন মামুনুর রশিদ। এ দুই পক্ষেই এখন দলীয় পদ পেতে জোর লবিং শুরু করেছে।
বিএনপি’র দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এখানে সভাপতি পদে তিনজন প্রার্থী ছিলেন। তার মধ্যে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল হক কামাল ছিলেন সবার চেয়ে ত্যাগী।দলকে সুসংগঠিত করতে তার রয়েছে অবদান। তিনি দলীয় হাই কমান্ডে তদবির করে কোন কুল কিনারা পাননি। এ কারণেই তিনি স্ট্রোক করে মারা যান।তবে এ নিয়ে গত ১৫ আগস্ট সকাল ১১ টায় সোনাইমুড়ী রেলস্টেশন মসজিদ চত্বরে জানাযার সময় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা যায়। অনেকেই জেলা বিএনপির কমিটির নেতাকর্মীদের দায়ী করেন। আবার নেতাকর্মীরা তার মৃত্যুর দায় জেলা বিএনপিকে নিতে হবে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেইসবুক) পোস্ট দিচ্ছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হচ্ছে।
সোনাইমুড়ী পৌর বিএনপি সাবেক একজন যুগ্ন আহবায়ক তার ফেসবুকে লিখেন,উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ নিয়ে জেলা কমিটির কতিপয় নেতা উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল হক কামালের সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। তিনি দলের হাই কমান্ডের নেতাদের তোষামোদ করতে পারেনি তাই তার সাথে এ ধরনের আচরণ করা হয়েছে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে তিনি স্ট্রক করে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে সোনাইমুড়ি উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একজন বিএনপি’র নিবেদিত কর্মী হারিয়েছেন বলে মন্তব্যে উল্লেখ করা হয়।
সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব দিদারুল আলম দিদার বলেন, তিনি বর্তমানে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি পদপ্রার্থী। দলের হাইকমান্ডের কাছে এ পথ পেতে ধরনা দিচ্ছেন। তবে এখানে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে আনোয়ারুল হক কামাল সদ্য স্টক করে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দলের দুঃসময় দলকে সুসংগঠিত করতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। এখন দল কি সিদ্ধান্ত নেন সে অপেক্ষায় রয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ফেসবুকে দেখেছি, অনেকেই উপজেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য লিখে পোস্ট করেছেন। সভাপতি পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে অন্যতম ছিলেন আনোয়ারুল হক কামাল। তিনি বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামীলীগের দুঃশাসনের সময় নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন। বর্তমানে উপজেলা কমিটিতে তাকে রাখা হবে না বলে মন্তব্য করেন জেলা বিএনপির এক নেতা। তার এই মন্তব্য সহ্য করতে না পেরে তিনি হয়তো স্ট্রক করে মারা যান। এখন জেলা বিএনপি’র কমিটিতে পদ পেতে অনেকেই তদবির করছেন। বিগত সময়ে যারা মাঠে ছিলেন না এই তালিকা তারাও রয়েছেন।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.