আজ
|| ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
লাশটি সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের, নিশ্চিত করলেন স্বজনেরা
প্রকাশের তারিখঃ ২২ আগস্ট, ২০২৫
প্রভাত রিপোর্ট: মুন্সিগঞ্জে মেঘনা নদী থেকে যে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের বলে নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্বজনেরা। বিভুরঞ্জনের ছেলে ঋত সরকার ও ভাই চিররঞ্জন সরকার আজ শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন।
৭১ বছর বয়সী বিভুরঞ্জন সরকার দৈনিক আজকের পত্রিকায় জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গতকাল সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বেরোনোর পর থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে গতকাল রাতে রমনা থানায় জিডি করেছিল পরিবার।
আজ বিকেল পৌনে চারটার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বলাকির চর এলাকার মেঘনা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ পাঠান গণমাধ্যমকে বলেন, বিকেলে বলাকির চর এলাকার মেঘনা নদীতে লাশটি ভাসছিল। পরে স্থানীয় লোকজন জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোনে করে তাঁদের জানান। তাঁরা ঘটনাস্থল গিয়ে বিকেল পৌনে চারটার দিকে লাশটি উদ্ধার করেন। সন্ধ্যার দিকে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা লাশের ছবি তুলে ঢাকার রমনা থানায় পাঠান। পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া বিভুরঞ্জন সরকারের ছবির সঙ্গে মরদেহের ছবির মিল পেয়ে এই সাংবাদিকের পরিবারকে জানায় পুলিশ। তারপর ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেন বিভুরঞ্জন সরকারের ছেলে ঋত সরকার ও চিররঞ্জন সরকার।
বাবার নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে ঋত সরকার গত রাতে রমনা থানায় জিডি করেন। তাতে তিনি বলেন, গতকাল সকাল ১০টার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার কথা বলে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বের হন বিভুরঞ্জন সরকার। বিকেল পাঁচটার মধ্যে তাঁর বাসায় ফেরার কথা ছিল। তিনি মুঠোফোনটি বাসায় রেখে গিয়েছিলেন। রাত ৯টার মধ্যে তিনি বাসায় না ফিরলে আজকের পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কামরুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছেলে জানতে পারেন যে তিনি (বিভুরঞ্জন সরকার) অফিসে যাননি। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও বিভুরঞ্জনের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ‘খোলা চিঠি’ শিরোনামে বিভুরঞ্জন সরকারের একটি লেখা প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় চিঠিটি তিনি তাদেরকে মেইল করেছিলেন। ‘জীবনের শেষ লেখা হিসেবে এটা ছাপতে পারেন।’– ফুটনোট দেয়া ওই লেখায় বিভুরঞ্জন সরকার দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ নানা ঘটনা, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও গণমাধ্যম পরিস্থিতি, নিজের ও ছেলের অসুস্থতা, মেডিকেল পাস সরকারি কর্মকর্তা মেয়ের উচ্চতর পরীক্ষায় ‘ফেল করা’, বুয়েটে থেকে পাস করা ছেলের ‘চাকরি না হওয়া’এবং নিজের আর্থিক দৈন্য দশা নিয়ে হতাশার কথা উল্লেখ করেন।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.