প্রভাত রিপোর্ট: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে। তাদের যারা বৈধতা দিয়েছে, তাদেরও বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে ডামি বলেন আর অ্যাকচুয়াল বলেন, যারা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এমপি হয়ে ফ্যাসিস্ট কারখানা তৈরিতে সহযোগিতা করেছে, সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে, তারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম এ কথা বলেন। এ সময় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব ও সিলেট অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রীতম দাশ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মৌলভীবাজার জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতাদের নিয়ে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সারজিস আলম বলেন, ‘২৪, ১৮, ১৪-এর নির্বাচনে যাঁরা অংশগ্রহণ করে সুবিধা ভোগ করেছেন, যাঁরা ওই সময় সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আওয়ামী লীগকে সরকারি দলের বৈধতা দিয়েছেন, তাঁদের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো অধিকার নেই। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—আওয়ামী লীগের প্রশ্নে বলেছি, জাতীয় পার্টির প্রশ্নে বলেছি, তাদের বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষিদ্ধ করার দিকে যেতে হবে।’
নির্বাচনসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে সারজিস বলেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচনের যে সময় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, এটা নিয়ে আমাদের জায়গা থেকে বিরোধিতা জানাইনি। আমরা জনগণের প্রত্যাশাটা তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, মৌলিক সংস্কারগুলো যদি না হয়, জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন যদি না হয়…এত বড় যে গণহত্যা হলো, এটার যদি ন্যূনতম বিচারিক প্রক্রিয়া দৃশ্যমান না হয়, তাহলে আপনি যে সময়সীমাই বলেন না কেন, সেই সময় জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা।’ গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের কোনো সমস্যা নেই বলে তিনি জানান।
শাপলা প্রতীক না পেলে অন্য কোনো বিকল্প আছে কি না, জানতে চাইলে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা শাপলার ক্ষেত্রে আলাদা অপশন দিয়েছি। আমরা সাদা শাপলা দিয়েছি, লাল শাপলা দিয়েছি। সবচেয়ে দুঃখের কথা, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান (নির্বাচন কমিশন) কোনো আইনগত বাধা না থাকার পরও অন্য কোনো চাপের কারণে তারা এটা দেও=য়ার সাহস করতে পারছে না। এটা তাদের বড় ব্যর্থতা, এইটুকু সাহস তারা দেখাতে পারছে না। আমরা নতুন করে আবার আবেদন করেছি। তারা বলছে, শাপলা প্রতীক সংযুক্ত করা হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, শাপলা প্রতীক সংযুক্ত করা হবে। আমরা সেটা মার্কা হিসেবে পাব।’
গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে একীভূত হওয়া নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, ‘তাদের (গণ অধিকার) পজিটিভ চিন্তাধারা রয়েছে, আমরাও এ বিষয়ে পজিটিভ। আলোচনা চলছে। আলোচনা পজিটিভভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এখনো ফাইনাল সিদ্ধান্ত হয়নি। ফাইনাল সিদ্ধান্ত হলে আপনারা জানতে পারবেন।’
সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা যেন সবচেয়ে ভালো, যোগ্য মানুষটাকে বেছে নিই। যারা সৎ থেকে, সব ধরনের অপকর্ম থেকে দূরে থেকে, সর্বোচ্চভাবে দেশের মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছে। আমরা যেন তাদের সমর্থন দিই, সহযোগিতা করি।’