হাসানাত আকাশ , শিবচর: বর্ষার শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাতেও ডেঙ্গুর প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত মোট ২০৪ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ২০৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতিমা মাহজাবীন জানিয়েছেন, জুন মাসে ১৯ জন, জুলাইয়ে ৭১ জন, আগস্টে ৫৯ জন এবং সেপ্টেম্বরে ৫৫ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আক্রান্তদের মধ্যে জুলাই মাসেই সবচেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসা নেন। ওই মাসেই এক রোগী জটিল স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে ডেঙ্গুর পাশাপাশি অন্যান্য রোগে ভুগে মৃত্যুবরণ করেন।
ডা. মাহজাবীন আরও বলেন, “রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সবসময় প্রস্তুত। তবে প্রতিদিন এত রোগীর সেবা দেওয়ার তুলনায় আমাদের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা খুবই সীমিত। ফলে যথাযথ সেবা দিতে গিয়ে আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়ছি।”
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী গিয়াস উদ্দিন জানান, “আমি প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসি। পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরে নিয়মিত চিকিৎসা, ওষুধ এবং পর্যবেক্ষণের ফলে এখন ডেঙ্গু নেগেটিভ এসেছে। আলহামদুলিল্লাহ, আমি অনেকটাই সুস্থ আছি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. ইব্রাহিম বলেন, “ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শুধু হাসপাতালের চিকিৎসা যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা, মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করা এবং নিয়মিত জনসচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।” তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, “বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমলেও যদি পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রমে অবহেলা করা হয়, তবে পুনরায় সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে চিকিৎসকের পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারের সদস্যকে সচেতন হতে হবে। নিয়মিত পানি জমে থাকা স্থান পরিষ্কার রাখা, মশারি ব্যবহার এবং আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ডেঙ্গু মোকাবিলার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।