প্রভাত সংবাদদাতা, রংপুর : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে, তারা যেনতেনভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারলে বেঁচে যান। তাদের এভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা, দায়মুক্তির মানসিকতা এবং সেফ এক্সিট নেওয়ার প্রবণতা দেশের জনগণ কখনও মেনে নেবে না।’
জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদান শেষে শনিবার নিজের নির্বাচনি এলাকা কাউনিয়া যাওয়ার পথে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
এনসিপি নেতা আখতার সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের পর জনগণ আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে উপদেষ্টাদের দায়িত্ব দিয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও তার উপদেষ্টাদের ফাঁকিবাজি করে নয়, তাদের দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করতে হবে। তারা মনে করেছেন, এভাবে দায়সারাভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন– এরকম পলায়নপর মানসিকতা পরিহার করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের যে স্পিরিট, সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি করে সত্যিকার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। এর কোনও বিকল্প নেই।’
আখতার হোসেন আরও বলেন, ‘জনগণের স্বার্থে ও জাতীয় স্বার্থে যদি জোট করার প্রয়োজন হয় সেটা আমরা বিবেচনায় রেখেছি এবং এ বিষয়টি এখনও ওপেন রেখেছি।’তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অবশ্যই যোগ দেবো। কিন্তু সরকার এর আগে এক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তারা যেন এভাবে কোনও দলের দ্বারা প্রভাবিত না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখার অনুরোধ করছি। জুলাই সনদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি পুরোপুরি অর্জিত না হলেও জুলাই বন্দোবস্তের অনেক দাবি অর্জন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। সেটাকে আমরা অর্জন বলে মনে করি।’
নির্বাচনে এনসিপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আখতার বলেন, ‘আমরা অতি অল্প সময়ে সারা দেশে আমাদের দলের সাংগঠনিক কাঠামো গঠন করতে সক্ষম হয়েছি। নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করার পরে আমাদের দল এনসিপি এখন নিবন্ধন পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এটাও আমাদের অনেক বড় অর্জন।’ এর আগে শনিবার দুপুরে ঢাকা থেকে রংপুর নগরীর মর্ডান মোড় এলাকায় এলে এনসিপির নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে আখতারকে বরণ করে নিয়ে আসেন। এ সময় জেলা এনসিপি নেতা শান্তি কাদেরী, রোস্তম আলীসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে গত ৮ অক্টোবর রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া আনিসুর রহমান লাকুর কবর জিয়ারত এবং তার বাসভবনে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এনসিপি সদস্য সচিব।