প্রভাত রিপোর্ট: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অনেকেই একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, ১৯৭১ এ স্বাধীন হয়েছিলাম বলে আজ আমরা এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। সমস্ত ষড়যন্ত্র পরাজিত করার শক্তি দেশের জনগণের আছে। রবিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি আয়োজিত এক স্মরণসভায় এ কথা বলেন তিনি।
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন বিলম্বিত করতে কয়েকটি দল পিআর পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলন করছে। পিআর দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেয়া কোনো কিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করে না। জনগণ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেখতে চায়। পরীক্ষিত দলকেই জনগণ বেছে নেবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি প্রথম দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না চাইলেও সকলের চাওয়ায় এক রাতে সে বিল পাশ করেছিল। তারপরও অনেকে বিএনপিকে দোষারোপ করে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের সাত নভেম্বর জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের আধিপত্যবাদ থেকে বেরিয়ে এসেছে। আবারও তারেক জিয়ার নেতৃত্বে দেশ স্বনির্ভর হবে।
ফখরুল বলেন, সংস্কার কমিশন পিআর পদ্ধতি বিষয়টি আনেনি, তবে দু-একটি রাজনৈতিক দল সেই পদ্ধতির কথা বলছে এবং যেটার জন্য তারা আন্দোলন করছে। আন্দোলনের লক্ষ্য একটাই, সেটি হচ্ছে নির্বাচন বিলম্বিত করা। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা। পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তো আমরা স্পষ্ট বলেছি এবং জনগণই এই পদ্ধতি গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেয়া কোনো কিছু মানুষ গ্রহণ করবে না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কমিটমেন্ট আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন। আমরা সেটাই দেখতে চাই। জনগণ নির্বাচন দেখতে চায় এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায়। গণতন্ত্রের মধ্য দিয়েই জনগণের আশা পূরণ করতে চায়।
সংস্কারের মধ্যেই বিএনপির জন্ম হয়েছে জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, আমরা সবসময় সংস্কারের পক্ষে ছিলাম, যদিও আমাদের বিরুদ্ধে প্রচুর প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে। আমরা বলে দিতে চাই, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি, মিডিয়ার স্বাধীনতা এটাও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ের। বিএনপির জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যেমন অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, তেমনি কর্মযজ্ঞে হাতে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারেক রহমান।
নির্বাচনে সেই দলকেই জনগণ বেছে নেবে যে দল পরীক্ষিত। অতীতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে অর্থাৎ সরকারের ছিল কাজ করেছে। যেই দল মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে। যেই দল অন্ধকার থেকে আলোতে টেনে নিয়ে এসেছে। অর্থাৎ মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে।
‘কিছু মানুষ চেষ্টা করে আমাদের ৭১ সালের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে’- এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিষয়টি সবসময় মাথায় রাখতে হবে, ৭১ এ যুদ্ধ হয়েছিল বলেই স্বাধীন হয়েছিলাম, নতুন চিন্তা করতে পারছি। স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই কিন্তু বাংলাদেশে মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করার সংগ্রাম করতে পারছি।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ একটা দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেটি মাথায় রেখে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যাই। অনেক ষড়যন্ত্র আছে, চক্রান্ত আছে। ষড়যন্ত্র -চক্রান্তকে পরাজিত করার শক্তি এ দেশের মানুষের আছে।