প্রভাত রিপোর্ট: জুলাই সনদ একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত উল্লেখ করে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, এটি অতীতের যেকোনো বন্দোবস্তের চেয়ে স্বচ্ছ, সুগঠিত ও সুনির্দিষ্ট। এই সনদ আইনের পাতায় স্মরণীয় একটি ইতিহাস হিসেবে রয়ে যাবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যদি ব্যর্থ হই তাহলে আমরা আগামী প্রজন্মের কাছে ভীরু কাপুরুষের উপমা হয়ে থাকবো। শনিবার (১৮ অক্টোবর) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, এই সনদ বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ থাকলেও তা উত্তরণ সম্ভব। জুলাই সনদ নিয়ে তর্ক করা হলে তা হবে অনাহত বিতর্ক। এটা কোরআন বা বাইবেল নয় যে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না। ৩৬ জুলাইয়ের পরাজিত শক্তির ন্যারেটিভ গ্রহণ করে, আমরা যদি জুলাই সনদ বানচাল করতে চাই, তবে দেশ পিছিয়ে পড়বে। ’৭২ এর সংবিধানকে অনেক কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার আইনের শাসন ব্যাহত করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলে জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। জুলাই হত্যার বিচারও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়তে এগিয়ে যাবে। এই বিচারকার্য কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না। বিগত ফ্যাসিস্টদের গুম-খুনের বিচারের সব প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে, যুক্তি-তর্ক চলছে, এখন রায়ের অপেক্ষা। জুলাই চেতনার অঙ্গীকারই এই বিচারের মূল ভিত্তি। ছায়া সংসদের ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই সনদ জাতির এক ঐতিহাসিক দলিল, যার বাস্তবায়নের ওপরই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এই সনদ ব্যর্থ হলে ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, দেশে অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটবে, আর গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদ জনগণের ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতিফলন। এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ ঘটবে এবং ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুস্পষ্ট হবে। তবে কেবল নির্বাচন নয়, সুশাসন ও জবাবদিহিতার মাধ্যমেই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব। যে দল এই সনদ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবে, জনগণ ভবিষ্যতে তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।
ছায়া সংসদে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক হাসান জাবেদ, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন ও সাংবাদিক মাইদুর রহমান রুবেল। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।