প্রভাত রিপোর্ট: জুলাই সনদ বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষার নতুন অধ্যায়—এমন মন্তব্য করে এ সনদ সই হওয়ার বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ঐক্য প্রমাণ করেছে বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেছেন, জুলাই সনদ দেশের রাজনৈতিক ঐক্যের এক নতুন অধ্যায়। যা দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘পিআর একটি জনবিচ্ছিন্ন দাবি, গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন’ নিয়ে চলমান ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, বৃষ্টিভেজা আবহাওয়া উপেক্ষা করে প্রায় ছয় মাসের পরিশ্রমের ফল হিসেবে যে জুলাই সনদ সই হয়েছে, সেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই সনদ সই প্রমাণ করেছে, গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রশ্নে দেশের সব রাজনৈতিক শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ।
সাবেক এই চিফ হুইপ স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি ৫৫ বছর আগে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছি এই দেশ স্বাধীন করার জন্য। আজও সেই একই স্পৃহা নিয়ে বলি আমরা যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শে, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এবং তারেক রহমানের দূরদর্শিতায় বিশ্বাস করি, তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। ইলিয়াস আলী, আলম, হারুনসহ অনেকেই হারিয়ে গেছেন। কিন্তু আমরা আমাদের প্রিয় সহযোদ্ধাদের ত্যাগ কখনো ভুলিনি।
জুলাইযোদ্ধাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ বিষয়ে তিনি বলেন, যদিও কিছু বিশৃঙ্খলা ঘটেছিল, সেটি দুঃখজনক। আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি আমাদের ঐক্য ভাঙতে পারবে না। যাদের বিশেষ কোনো দাবি ছিল, তারা ইউনূস সাহেবের বাসভবনে গিয়ে আলোচনা করতে পারতেন। আমি বিশ্বাস করি, এ ঐক্য বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে নতুন পথে নিয়ে যাবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমরা সবাই জানি, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন। সেই নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। তাই আমাদের ঐক্য দরকার—যেন আবার কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার দেশে প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে হাসিনা সরকার দেশের গণতন্ত্রকে দমন করেছে। আমাদের নেতাকর্মীরা নির্যাতিত, কারাবন্দি, এমনকি হত্যা ও নিখোঁজের শিকার হয়েছে। এ অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, জুলাই সনদের মূল লক্ষ্য একটিই—বাংলাদেশে যেন আর কোনো অনির্বাচিত সরকার গঠিত না হয়। কেউ যেন মুক্তিযুদ্ধের নামে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে না পারে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তবে বাংলাদেশের জনগণই বিজয়ী হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মনজুর রহমান ভূইয়া এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন—বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, ফরিদা ইয়াসমিন, তাঁতীদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সাংবাদিক রাশেদুল হক ও মৎস্যজীবী দলের নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।