প্রভাত রিপোর্ট: ৪৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়ার পরও ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে’ ঝুলে আছে দেড় হাজারেরও বেশি প্রার্থীর নিয়োগপ্রক্রিয়া। দ্রুত দৌরাত্ম্য কাটিয়ে গেজেট প্রকাশের দাবিতে ভুক্তভোগী প্রার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধন থেকে দ্রুত গেজেট কার্যক্রম শুরু করা, রিপিট ক্যাডারের বিধি সংশোধনের ব্যাখ্যা ও চলতি বছরের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জোর দাবি জানিয়েছেন সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা।
সুপারিশ পেয়ে বেসরকারি চাকরি ছেড়ে এখন বেকার বসে আছেন লিটন আলী সরকার। মানববন্ধনে তিনি বলেন, বিসিএসে চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার পর আমি পুলকিত ছিলাম। আমার পরিবারপরিজন ব্যাপকভাবে আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন। একটা বেসরকারি চাকরি করতাম। পরিবারের সদস্যদের কথামতো তা ছেড়েও দিই। কিন্তু এখন ভাগ্য ঝুলে গেছে। পরিবারও বিষয়টি নিয়ে হতাশ। আমি দ্রুত গেজেট চাই। নিদারুণ এ মানসিক চাপ আর নিতে পারছি না।
সুপারিশপ্রাপ্ত অন্য প্রার্থীরা বলেন, ফলাফল প্রকাশের প্রায় চার মাস অতিবাহিত হয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে এক হাজার ৬৯০ প্রার্থী নিদারুণ মানসিক চাপ নিয়ে দিনাতিপাত করছেন। তাদের মানবিক দিকটি সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। রিপিট ক্যাডারদের সম্মতির ভিত্তিতে বাদ দিয়ে মেধাক্রম অনুযায়ী পরবর্তী প্রার্থীদের সুপারিশ করা উচিত।
চাকরিপ্রার্থীরা জানান, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ইতিমধ্যেই তিন বছর সাত মাস পার হয়েছে। ইতিহাসের দীর্ঘতম বিসিএসের রূপ নিতে যাচ্ছে ৪৪তম বিসিএসের নিয়োগ কার্যক্রম। এটি কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
এদিকে, চাকরিপ্রার্থীরা মানববন্ধন থেকে তিনটি দাবি জানিয়েছেন। সেগুলো হলো—গেজেট কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা; ফল প্রকাশের পর আটকে থাকা রিপিট ক্যাডারের বিধি সংশোধনের দ্রুত ব্যাখ্যা প্রদান ও চলতি বছরের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা।
৪৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২২ সালের ২৭ মে। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন ১৫ হাজার ৭০৮ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১১ হাজার ৭৩২ জন। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে চলতি বছরের ৩০ জুন ১ হাজার ৬৯০ প্রার্থীকে সুপারিশ করা হয়।
পিএসসি সূত্র জানায়, ৪৪তম বিসিএসে প্রায় ৪০০ রিপিট ক্যাডার (আগের বিসিএসেও একই ক্যাডারে নিয়োগ পেয়ে কর্মরত) হয়। এতে পদগুলো শূন্য থেকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। সার্বিক দিক বিবেচনায় পিএসসি বিধি সংশোধন করে রিপিট ক্যাডারের তথ্য নিয়ে পুনরায় ফল প্রকাশের উদ্যোগ নেয়।
পিএসসির বিধি সংশোধনের সেই প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে আইন মন্ত্রণালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপন জারি করার কথা। এ প্রজ্ঞাপন জারি হলেই কেবল পিএসসি পুনরায় ফল প্রকাশ করতে পারবে। তারপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করবে।