• সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ঐকমত্য কমিশনের সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত, সুপারিশ পেশ আগামীকাল বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে গিয়ে আ.লীগই নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে : মঈন খান দলীয় বিবেচনা নয়, যোগ্য-জনবান্ধব প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে: সালাহউদ্দিন আহমদ সারাদেশে ভোটকেন্দ্র হবে ৪২ হাজার ৭৬১টি মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা নাঈমুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বিটিআরসির ৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: আইওএফ’র ১২ জনের জামিন বর্তমান ট্রাইব্যুনাল স্বচ্ছ, ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ নয় : স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী অবিলম্বে বন্দর ইজারা দেয়ার পায়তারা বন্ধ কর – নাজমুল হক প্রধান আমরা আমাদের জায়গা থেকে শাপলা আদায় করে নেবো : সারজিস

ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৯৮৩

প্রভাত রিপোর্ট / ৫ বার
আপডেট : সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট: মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত মশাবাহিত জ্বরটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৯ জনে। এ সময় নতুন করে আরও ৯৮৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সোমবার (২৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৭১ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৩৩ জন, খুলনা বিভাগে বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬২ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১ জন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭০ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবত হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন মোট ৬৩ হাজার ৪১৪ জন ডেঙ্গুরোগী বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিগত বছরগুলোর চেয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। গত তিন মাসের তুলনায় এ মাসের ২৭ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতি মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
চলতি বছরে ডেঙ্গুরোগী বাড়তে শুরু করে মে মাস থেকে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জুলাই মাসে ১০ হাজার ৬৮৪ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। আগস্টে ভর্তি ছিলেন ১০ হাজার ৪৯৬ জন, মৃত্যু হয় ৩৯ জনের। সেপ্টেম্বর মাসে হাসপাতালে ভর্তি হন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন, মৃত্যু হয় ৭৬ জনের।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৬৫ হাজার ৪৪০ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে যায়। রাস্তায় কিংবা বাসাবাড়ির আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা পলিথিন, খাবারের প্যাকেট, ডাবের খোসা ইত্যাদিতে পানি জমে এডিস মশার বংশবিস্তার হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘দেরিতে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে যে হারে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে, এই অবস্থায় এসে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ‘এবারের ধরন একটু ব্যতিক্রম। জলবায়ুর পরিবর্তন, দেরিতে বৃষ্টিপাত, স্থানীয় সরকার পরিবর্তন, মেয়র ও কাউন্সিলর না থাকা, মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগের অভাব- এগুলোই প্রধান কারণ। সাধারণভাবে স্প্রে করে মশা নিয়ন্ত্রণ করা হয়, কিন্তু এখন লক্ষ্যভিত্তিকভাবে কাজ করতে হবে। শুধু সরকার নয়, কমিউনিটি মবিলাইজেশন বাড়াতে হবে। বাসাবাড়ি, নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখতে হবে, কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গুর বর্তমান ধাক্কা জানুয়ারি পর্যন্ত টিকতে পারে। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে মশার উপদ্রব কমে যাবে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে এক লাখ ১ হাজার ৩৭৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের। ২০২৫ সালের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৫ হাজার ৪৪০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৬৩ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় কম হলেও মৃত্যুর সংখ্যা ইতিমধ্যে প্রায় ১০০ জন বেশি। ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন, মৃত্যু হয় ১০৫ জনের। ২০২২ সালে আক্রান্ত হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন, মৃত্যু হয় ২৮১ জনের। ২০২৩ সালে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়- সে বছর আক্রান্ত হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। ২০২৪ সালে আক্রান্ত হন ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের। বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এ বছর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বয়সসীমার মানুষ কর্মজীবী ও চলাফেরায় বেশি সক্রিয় থাকায় তারা বেশি মশার সংস্পর্শে আসছে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও