আজ
|| ১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণার দাবি
প্রকাশের তারিখঃ ১৫ নভেম্বর, ২০২৫
প্রভাত রিপোর্ট: ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে বছরব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ। সংগঠনটি ‘কাদিয়ানি’ সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করার দাবিতে এই কর্মসূচি প্রকাশ করে। দলটি বলছে, দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে তারা।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসম্মেলনের মঞ্চ থেকে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা না হলে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন থেকে কঠিন থেকে কঠিনতর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— আগামী বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আলেম-ওলামা ও তৌহিদী জনতার গণস্বাক্ষর গ্রহণ; মে ও জুন মাসে দেশের প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান; এবং জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় খতমে নবুওয়ত সম্মেলন আয়োজন। দেশে আগে বিক্ষিপ্তভাবে হলেও এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন করল খতমে নবুওয়ত। বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশের আলেমরা এই সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদ এই সম্মেলন আয়োজন করে। এর তত্ত্বাবধানে ছিল খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটি।
সংগঠনটি জানিয়েছে, এসব কর্মসূচির পরও দাবি পূরণ না হলে আগামী ডিসেম্বর মাসে দেশের প্রতিনিধিত্বশীল আলেম-ওলামাদের নিয়ে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।
বিএনপির, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতারা খতমে নবুওয়তের এই সম্মেলনে বক্তব্য দেন। সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের আহ্বায়ক ও খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির মাওলানা আবদুল হামিদের (পীর সাহেব, মধুপুর) অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এই সম্মেলনে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমানও বক্তব্য দেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, দারুল উলুম হাটহাজারীর অধ্যক্ষ মাওলানা খলিল আহমাদ কুরাইশী, আল হাইয়াতুল উলিয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেকসহ দেশের শীর্ষ আলেম ও রাজনীতিবীদরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুয়ত মুভমেন্টের (সৌদি আরব) নায়েবে আমির শায়খ আবদুর রউফ মাক্কি, মিসরের আল-আজহার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শায়খ মুসআব নাবিল ইবরাহিম, ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানি, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানী, পাকিস্তানের ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা ইলিয়াস গুম্মান, পাকিস্তানের বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা হানিফ জালন্দরি, পাকিস্তানের ইউসুফ বিন্নুরি টাউন মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম আহমাদ ইউসুফ বিন্নুরিও এই সম্মেলনে অংশ নেন।
সারাদেশ থেকে খতমে নবুওয়তের নেতা–কর্মীরা এই সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ‘খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশ’-এর স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করেন।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.