মো. বাবুল শেখ, পিরোজপুর : পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৭নংসেখমাটিয়া ইউনিয়নের গরঘাটা গ্রামের ইসহাক শেখের বাড়ির সামনে অবস্থিত লোহার পুলটি প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভাঙা অবস্থায় পানিতে হেলে রয়েছে। দীর্ঘ অবহেলা ও সংস্কারের অভাবে একসময় স্থানীয় মানুষের প্রধান চলাচলের পথটি এখন পরিণত হয়েছে চরম দুর্ভোগে। পুলটি অচল হয়ে পড়ায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী বাঁশ, কাঠ ও সুপারি গাছ দিয়ে তৈরি করেছেন একটি অস্থায়ী সাঁকো। এই দুর্বল সাঁকোর ওপর ভরসা করেই প্রতিদিন শত শত মানুষ বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
প্রতিদিন সকালে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা হাতে বই-খাতা, পিঠে ব্যাগ নিয়ে যখন স্কুলের পথে বের হয়, তখন তাদের সামনে অপেক্ষা করে সেই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো। বর্ষায় সাঁকো পিচ্ছিল হয়ে পড়লে অনেক শিক্ষার্থী পড়ে গিয়ে আঘাত পায় নষ্ট হয় বই-খাতা। আবার খালে পানি বৃদ্ধি পেলে সাঁকো ভেসে যাওয়ার উপক্রম হলে পুরো এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এই সাঁকো ব্যবহার করে প্রতিদিন গরঘাটা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, ৬৮ নং গরঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গরঘাটা সর্বজনীন দুর্গা মন্দির, হরিসভা পূজা মণ্ডপ এবং সেখমাটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বাবুরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন।
শিক্ষার্থী অভিভাবক মমতাজ উদ্দীন সোহাগ বলেন, এখন সন্তানদের স্কুলে পাঠানোই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্বল সাঁকো পার হতে গিয়ে সবসময় দুর্ঘটনার ভয়ে থাকতে হয়। লোহার পুলটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। বর্ষায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়।
দুই শিক্ষার্থী মেহেদী ও নিপা বলেন, প্রতিদিন সাঁকো পার হতে খুব ভয় লাগে। বর্ষায় সাঁকো এত পিচ্ছিল হয় যে হাঁটাই কঠিন হয়ে পড়ে। স্কুলে যেতে ইচ্ছা থাকলেও সাঁকো দেখলে ভয় হয়। দ্রুত একটি পুল নির্মাণ করা হলে আমরা নিরাপদে যেতে পারতাম।
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক ও এলাকার অন্যান্য বাসিন্দাদের দাবি অবিলম্বে একটি পুল নির্মাণ করে শিক্ষার্থীসহ সকলের নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এলাকার মানুষের প্রত্যাশা যত দ্রুত সম্ভব একটি নুতন করে পুল নির্মাণ করে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।
ইউপি সদস্য বেলায়েত হোসেন বুলু জানান, পুলটি সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।
ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মিল্টন বলেন,পুলটি নির্মাণের জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।