প্রভাত রিপোর্ট: সংস্থাকে লাভজনক করতে ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) ১১টি নতুন প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দ্বীপজেলা ভোলায় একটি সার কারখানা, একটি গ্লাস কারখানা ও একটি বেসিক কেমিক্যাল প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা।
প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে ৮টি নতুন কারখানা স্থাপন ও বিভিন্ন কারখানার খালি জায়গায় প্ল্যান্ট স্থাপন ও সম্প্রসারণ। বর্তমানে বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৮টি। এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠান ইউরিয়া, ডিএপি ও টিএসপি সার উৎপাদন করে। তবে দীর্ঘস্থায়ী গ্যাস সংকটের কারণে সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রস্তাবিত নতুন কারখানাগুলো হলো: মুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (জেএফসিএল) খালি জায়গায় একটি ইউরিয়া-ফরমালডিহাইড-৮৫ কারখানা; টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডে টিএসপি সার কারখানা; ভোলায় ১,৭০০ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন সরকারি সার কারখানা; খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস ও খুলনা হার্ডবোর্ড মিলস প্রাঙ্গণে স্টার্চ কারখানা ও অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) কমপ্লেক্স; চিটাগং কেমিক্যালস কমপ্লেক্সের প্রাঙ্গণে ক্লোরিন-অ্যালকালি ও সংশ্লিষ্ট বেসিক কেমিক্যাল কারখানা; বাংলাদেশ ইনসুলেটর অ্যান্ড স্যানিটারিওয়্যার ফ্যাক্টরিতে আধুনিক প্ল্যান্ট; উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরিতে বিশেষ গ্লাস উৎপাদন প্ল্যান্ট; ঢাকা লেদার কোম্পানির প্রাঙ্গণে আধুনিক চামড়া কারখানা; সার প্যাকেজিংয়ের জন্য ডব্লিউপিপি ব্যাগ তৈরির কারখানা এবং আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানির ১৯৭ একর জায়গায় নতুন গ্লাস কারখানা।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) কর্পোরেশনের কার্যালয়ে ‘বিএআইসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে দিনব্যাপী কর্মশালা’য় এসব উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানানো হয়। শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান কর্মশালার উদ্বোধন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিসিআইসির চেয়্যারম্যান মো. ফজলুর রহমান। কর্মশালায় সমাপনীতে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
কর্মশালায় বিসিআইসির পরিচালক (পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন, অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. দেলোয়ার হোসেন বিস্তারিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। কারখানগুলো স্থাপনের বিষয়ে যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিসিআইসিকে লাভজনক করতে নতুন প্রকল্প বা উদ্যোগ নিতে হবে। সার কারখানা স্থাপন করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমবে, ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।
এর আগে ইউরিয়া সার কারখানাগুলোতে লোকসানের প্রধান কারণগুলো চিহ্নিত করে বিসিআইসি। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘ সময় কারখানা বন্ধ থাকা, যন্ত্রপাতির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতা।
লাভজনক করতে সুপারিশে বলা হয়, প্রয়োজনীয় প্রেশার অনুযায়ী প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে নিরবচ্ছিভাবে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা; প্রায় দেড় যুগ ধরে বন্ধ থাকা কারখানাগুলোর যন্ত্রপাতি যাতে স্থায়ীভাবে নষ্ট না হয়ে যায়, সেজন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করা; যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনে তৎক্ষণিক উদ্যোগ গ্রহণ এবং নতুন স্থাপিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার ঋণের কিস্তি পরিশোধে সারের বিক্রয় মূল্য আন্তজার্তিক বাজারদর অনুযায়ী নির্ধারণ করা।