• মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের প্রথম সচিব হলেন হাবিবুর রহমান দেড় ঘণ্টা পর চকবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য ১৫৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পসহ ১৮ প্রকল্প অনুমোদন বন্ধ হচ্ছে ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো সময়োপযোগী ও ভবিষ্যতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি তেলের দাম লিটারে বাড়ল ২ টাকা সৌদিতে ২১ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার ইমরান খানের ছেলে বললেন, ‘বাবা বেঁচে আছেন কি না জানি না’ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একমাত্র সমাধান:পোপ লিও

রোনালদোর শাস্তি স্থগিতের আসল গল্প

প্রভাত রিপোর্ট / ১২ বার
আপডেট : শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫

প্রভাত স্পোর্টস : অনেকের ভ্রু হয়তো কুঁচকে গেছে। কিন্তু সত্যি বলতে, এতে অবাক হওয়ার কিছু আছে কি? বিষয়টা বুঝতে হলে একটু পেছনে তাকাতে হয়। ইনফান্তিনো দায়িত্ব নেওয়ার পর ফুটবল ক্যালেন্ডারে ওলট–পালটের ঘটনাও ঘটেছে। যেমন ১ জুলাই নিয়মিত দলবদল উইন্ডো চালু হওয়ার কথা থাকলেও গত জুনে ১০ দিনের বিশেষ উইন্ডো খোলা হয়েছিল। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ খেলিয়ে দেওয়ার জন্য এই উইন্ডো—এমন গুঞ্জনও ওঠে তখন। তাহলে ফিফা যে এখন রোনালদোর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করবে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কী আছে? কিন্তু ভ্রুকুটি অর্থাৎ প্রশ্নের জায়গা সম্ভবত আছে। আর সেটা যে কেউ তুলতে পারেন স্বয়ং ফিফারই ম্যাচের পতাকায় লেখা ‘ফেয়ার প্লে’ কথাটি টেনে। এটা তো ফিফারই দর্শন, তাই না? সবার সমান প্রাপ্য। কিন্তু রোনালদোর ক্ষেত্রে ফিফা যা করেছে, তাতে কি সেটা নিশ্চিত হলো?

ঘটনাটায় একবার চোখ বোলানো যাক।

১৪ নভেম্বর বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের দারা ও’শেয়ারকে কনুই মেরে লাল কার্ড দেখেন রোনালদো। পর্তুগালের জার্সিতে ২২৬তম ম্যাচে এটা তাঁর প্রথম লাল কার্ড। নিয়মানুযায়ী লাল কার্ড দেখলে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা অবধারিত। সে হিসাবে বাছাইপর্বে পর্তুগালের পরের ম্যাচে (আর্মেনিয়ার বিপক্ষে) খেলতে পারেননি রোনালদো। কোন লাল কার্ডে কত ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা হবে, তা ঠিক করে ফিফা ডিসিপ্লিনারি কমিটি। যে ঘটনার কারণে রোনালদো লাল কার্ড দেখেন, সেটি ‘সহিংস আচরণ’ শাখায় পড়ে। যার শাস্তি তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা। তা–ও প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে। গত মঙ্গলবার ফিফা জানিয়েছে, রোনালদোর নিষেধাজ্ঞা তিন ম্যাচেরই। তবে যে দুটি ম্যাচ বাকি আছে, সেটি এক বছরের জন্য স্থগিত থাকবে। কারণ? এবারের আগে পর্তুগালের হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ২২৫ ম্যাচে তিনি একবারও লাল কার্ড দেখেননি। একটা চোখরাঙানিও অবশ্য দিয়ে রেখেছে ফিফার শৃঙ্খলা কমিটি—যদি আগামী এক বছরের মধ্যে রোনালদো ‘একই ধরনের কিংবা একই মাত্রার শৃঙ্খলাভঙ্গ করেন, তাহলে বাকি দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।’
এটুকু পড়ার পর মাঠে খুব অল্প জায়গায় গিজগিজ করা প্রতিপক্ষের মধ্যে লিওনেল মেসির সুকৌশলে ড্রিবলিং করে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্ত আপনার মনে পড়ে যেতে পারে। ফিফাও কত কৌশলী, তাই না? ঠিক ওই বাংলা প্রবাদটির মতোই—‘সাপও মরল, লাঠিও ভাঙল না’। বলতে পারেন, ‘রোনালদোর নিষেধাজ্ঞাও কমানো হলো আবার নিয়মও ভাঙা হলো না।’ ফিফার জন্য করতালি। কারণ, ফুটবলের নিয়ন্ত্রক এ সংস্থা যা করেছে সেটা কিন্তু নিজেদের এখতিয়ারের ভেতরে থেকেই।
কেউ কেউ ভ্রুকুটি তুলে বলতেই পারেন, ফিফা রোনালদোকে ‘বিশেষ সুবিধা’ দিয়েছে কি না? উত্তর হলো, নিয়ম না ভেঙে কেউ যদি পছন্দের কাউকে বিশেষ সুবিধা দেয়, তাতে অসুবিধার কী আছে? হ্যাঁ, ন্যায্য-অন্যায্যের প্রশ্নটি উঠতে পারে। সে প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। আগে জেনে নেওয়া যাক, ফিফা কোন আইনবলে এই সিদ্ধান্ত নিল? ফিফার শৃঙ্খলাবিধি বলে, তারা কোনো খেলোয়াড়ের শাস্তি কমানো কিংবা বাতিলের অধিকার সংরক্ষণ করে।
শৃঙ্খলাবিধির ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, ফিফা কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থাকে ‘এক থেকে চার বছরের পর্যবেক্ষণকালীন সময়ের জন্য সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে স্থগিত’ করতে পারে। ২৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘ফিফা বিচারিক সংস্থা আরোপিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কমাতে পারে, এমনকি বাতিলও করতে পারে।’
অর্থাৎ রোনালদোর শাস্তি এখতিয়ারের মধ্যে থেকেই কমিয়েছে ফিফা।
এবার দেখা যাক, অতীতেও ফিফা অন্য খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না। তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে, কিন্তু সেটা আবার স্থগিত হওয়ায় খেলোয়াড় বিশ্বকাপ খেলছেন, এমন নজির অবশ্য নেই। তবে খেলোয়াড়দের প্রতি ফিফার সদয় হওয়ার উদাহরণ আছে। যেখানে শাস্তিও কমানো হয়েছে।
বিশ্বকাপে খেলা যেকোনো খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারের শীর্ষবিন্দু। আর বিশ্বকাপে কোনো খেলোয়াড়কে নিষিদ্ধ করার আগে ২৫ ও ২৭ অনুচ্ছেদবলে নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা ও তার প্রভাব বিবেচনা করার এখতিয়ার রাখে ফিফা। সেটা শুধুই তারকা খেলোয়াড়দের জন্য নয়।
২০১৪ সাল। বিশ্বকাপ প্লে অফের প্রথম লেগে ইউক্রেনের মুখোমুখি ফ্রান্স। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে চড় মেরে লাল কার্ড দেখেন ফ্রান্সের লরেন্ত কোসিয়েনলি। রোনালদোর মতো কোসিয়েনলিও তাঁর দেশের শেষ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে পারেননি। ফিফা এরপর আর তাঁর শাস্তির মেয়াদ বাড়ায়নি। ক্রোয়েশিয়ার মারিও মানজুকিচের উদাহরণও আসতে পারে। ২০২৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব প্লে অফ ফিরতি লেগে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে মারাত্মক ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন মানজুকিচ। বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম ম্যাচে তাঁর নিষিদ্ধ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফিফা তাঁর নিষেধাজ্ঞা এক ম্যাচেই সীমিত রাখে। আবার উল্টো দৃষ্টান্তও আছে, সেটা তারকা খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে।
২০০৬ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালের রিকার্ডো কারভালহোকে পা দিয়ে মাড়িয়ে লাল কার্ড দেখেন ইংল্যান্ড কিংবদন্তি ওয়েইন রুনি। সে ম্যাচে হেরে ইংলিশরা বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়। তবে রুনিকে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে হয় ২০০৮ ইউরো বাছাইয়ে। খেলতে পারেননি প্রথম দুই ম্যাচ। ফিফা তখন রুনির ক্ষেত্রে ‘নরম’ হয়নি। আবার ২০১২ ইউরো বাছাইয়ে মন্টেনিগ্রোর বিপক্ষে লাল কার্ড দেখায় মূল পর্বে ইংল্যান্ডের দুটি গ্রুপ ম্যাচে নিষিদ্ধ হন রুনি। দুই ক্ষেত্রেই ফিফা রুনির প্রতি কোনো ছাড় দেয়নি।
২০০৬ বিশ্বকাপের জার্মান স্ট্রাইকার মাইক হ্যানকেকে মনে আছে? সেই বিশ্বকাপের প্রায় এক বছর আগে কনফেডারেশনস কাপে মেক্সিকোর বিপক্ষে লাল কার্ড দেখেন হ্যানকে। মাঝে জার্মানির কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ ছিল না। কিন্তু বিশ্বকাপে জার্মানির প্রথম দুই ম্যাচে হ্যানকেকে নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি ফিফা। এখন প্রশ্ন হলো, রোনালদোকে বিশেষ সুবিধা দিতে গিয়ে ফিফা কি তাহলে নিজেদের এখতিয়ারের অপব্যবহার করল? কিংবা প্রশ্নটি অন্যভাবেও করা যায়। রোনালদো কিংবদন্তিদের একজন। তারকা খেলোয়াড়েরা খেলাধুলার সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছ থেকে একটু সুবিধা পান—সেটা মোটামুটি ‘ওপেন সিক্রেট’। এর কারণ হয়তো একটি খেলায় যত তারকা, ততই খেলার জনপ্রিয়তা এবং পসার বাড়ে। ফিফা এই ধারায় চলে রোনালদোকে বিশেষ সুবিধা দিতে গিয়ে কি তাহলে এক চোখে তেল আর অন্য চোখে নুন বেচছে?
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের দাবি, ইনফান্তিনোর এই আমলে ফিফায় আদর্শ একটাই, ‘যা মনে চায় তা–ই করব’। রুনির শাস্তি মওকুফ না করার বিষয়টি মাথায় রেখে সংবাদমাধ্যমটি হয়তো এ নিয়ে ফিফার প্রতি রাগান্বিত। তাই অমন কথা, এটাও ভাবতে পারেন। কিন্তু বাণিজ্যিক যে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা তো উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজনে সফলতা পেতে মরিয়া ফিফা। অন্যতম আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তাভাবনাও তা–ই। বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বকাপ নিয়ে এক কাঠি সরেস। মাঝেমধ্যেই শিষ্টাচার ভেঙে বিশ্বকাপ আয়োজনের ‘মূল পরিচালক’ হওয়ার ইঙ্গিত তাঁর কথায় ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বেরিয়ে আসে। এবার আসন্ন বিশ্বকাপে তাকানো যাক।
যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ। সেখানে সর্বকালের অন্যতম সেরা দুই তারকার একজন যদি বিশ্বকাপের প্রথম থেকে না থাকেন, তাহলে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার যে ব্যাপারটা, সেটা একটু মার খেয়ে যায়। জনপ্রিয়তায়ও ভাটা পড়তে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, মেসি ও রোনালদো দুই কিংবদন্তিরই এটা শেষ বিশ্বকাপ। স্বাভাবিকভাবেই ফিফা চায় বিশ্বকাপে দুজনের উপস্থিতি যত বেশি সম্ভব দীর্ঘ হোক। নকআউটের কথা কেউ বলতে পারে না, কিন্তু গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দল তিন ম্যাচ করে খেলবে বলে অন্তত এ কয় ম্যাচ তো তাঁদের পাওয়ারই কথা। বিশেষ করে বিশ্বকাপের শুরুর দিকে ‘উত্তাপ’ বাড়াতে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেসি–রোনালদোর উপস্থিতির চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে ফিফার জন্য?
ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা যে ‘বাণিজ্যিক ভাবনায়’ বেশ কৌশলী ও দূরদর্শী সব পথে হাঁটে, সে তো জানা কথাই। বছরখানেক আগের একটা ঘটনা স্মরণ করা যেতে পারে। ফিফা সভাপতি ঘোষণা করলেন, ইন্টার মায়ামি ২০২৫ ক্লাব বিশ্বকাপে খেলবে। তাঁর যুক্তি ছিল মায়ামির এ টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়াটা ‘প্রাপ্য’। কীসের ভিত্তিতে?
ইনফান্তিনোর যুক্তি ছিল, তারা এমএলএসের ‘সেরা ক্লাব’। কিন্তু বাস্তবতা তেমন ছিল না। মায়ামি নিয়মিত মৌসুমের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকলে তখন পর্যন্ত প্লে অফ ম্যাচে খেলেনি। ইনফান্তিনো করলেন কী, মায়ামির সাপোর্টার্স শিল্ড জয়কে পুঁজি করে তাদের ‘আয়োজক’ হিসেবে তুলে আনলেন ক্লাব বিশ্বকাপে। কেন? লিওনেল মেসি!
যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল এখনো সবার দুয়ারে প্রবেশ করতে পারেনি। বেসবল, বাস্কেটবল আর আমেরিকান ফুটবলই সেখানে জনপ্রিয়। এমন জায়গায় ফুটবলকে বাণিজ্যিকভাবে সফল করতে দরকার বড় মাপের তারকা, যেটা মেসিকে দিয়ে খুব সহজেই সম্ভব। ইনফান্তিনো মেসিকে অন্তর্ভুক্ত করে ক্লাব বিশ্বকাপে ভালোভাবে বিক্রি করতে পেরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকদের কাছে। এখন তাঁর সামনে এর চেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপ। নিয়মের ভেতরে থেকে রোনালদোকে ইনফান্তিনো যদি বিশ্বকাপের শুরু থেকে খেলাতে পারেন তাহলে সেই সুযোগ তিনি কেন নেবেন না?
তবু প্রশ্ন থেকে যায়। কাজটা ‘ফেয়ার প্লে’ হলো কি না। মানে উচিত হয়েছে কি না। সরাসরি উত্তর হলো—ফুটবলে ফেয়ার প্লের চেতনা থেকে দেখলে ‘না, ঠিক হয়নি’। কিন্তু এটাও তো সত্য, ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরকে সফল করার লড়াইয়ে কোন কাজ ঠিক-বেঠিক, সেদিকে নজর দেওয়াটা ফিফা–প্রধানের বিবেচ্য নয়। ফিফা–প্রধানের বিবেচ্য বিষয় আসলে ট্রাম্পের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে তাঁর দেশে বিশ্বকাপ আয়োজন সফল করা। এরই মধ্যে অনেক সংবাদমাধ্যম ট্রাম্প ও ইনফান্তিনোর মধ্যে সম্পর্ককে ‘ব্রোমান্স’ বলতে শুরু করেছে।
কেউ কেউ ষড়যন্ত্র-তত্ত্বও খুঁজে পেয়েছেন এর মধ্যে। কিছুদিন আগেই ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রোনালদো। সেখানে ইনফান্তিনো ও সৌদি আরবের যুবরাজের পাশাপাশি বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। এর ছয় দিন পর রোনালদোর শাস্তি নিয়ে ওই রায় দেয় ফিফা। ‘দ্য অ্যাথলেটিক’ এ নিয়ে একটি প্রশ্ন তুলেছিল তাদের প্রতিবেদনে: পর্তুগালের এক তারকা ফুটবলার কেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, সৌদি যুবরাজ সালমান এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে ব্যক্তিগত জেটে আটলান্টিক পাড়ি দিলেন? পাশাপাশি একটি ছোট প্রশ্নও তারা রেখেছিল, কেন রোনালদো জাঁকজমক সেই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন, যার সঙ্গে ফুটবলের বিন্দুমাত্র সম্পর্কও নেই?
উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে সংবাদমাধ্যমটিই। তবে বাক্যের শেষে একটা প্রশ্নচিহ্ন রেখে—সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো হস্তক্ষেপের জন্য যাতে রোনালদোকে বিশ্বকাপে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে না হয়? এই প্রশ্নের উত্তর আসলে সরাসরি দেওয়া সম্ভব নয়। তবে পরিবেশটা বুঝে নেওয়া যায়। রোনালদোর শাস্তি নিয়ে ফিফা যে রায় দিয়েছে, তাতে অনেক ফুটবলারই নিজেদের এই খেলায় ‘দ্বিতীয় শ্রেণির’ নাগরিক ভেবে বলতে পারেন—‘ফুটবলের ঈশ্বর’ থাকেন ওই ভদ্রপল্লিতে, যেখানে রোনালদোরা থাকেন।’
তবে ব্যাপারটি কিন্তু এখানেই শেষ হচ্ছে না। মেইল অনলাইন জানিয়েছে, ফিফার রোনালদোর শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধচারণ করে আদালতে যেতে পারে কিছু দেশ। সেটা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে (সিএএস)। বিশ্বকাপের ড্রয়ে যেসব দেশকে পর্তুগালের মুখোমুখি হতে হবে, তারা যেতে পারে এই আদালতে। তাহলে বলুন তো, ফেয়ার প্লে সত্যিই নিশ্চিত হলে ড্রর আগেই আদালতে যাওয়ার গুঞ্জন উঠছে কেন?


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও