• বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন

নাজিরপুরের রঘুনাথপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনটি বসতঘর পুড়ে ছাই

প্রভাত রিপোর্ট / ১০০ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫

মোঃ বাবুল শেখ,পিরোজপুর : পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সেখমাঠিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাত আটটার দিকে হঠাৎ আগুন লেগে তিনটি বসতঘর মুহূর্তেই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনের তীব্রতায় তিন পরিবারের বহু বছরের সঞ্চয়, স্বপ্ন এবং আশ্রয় চোখের সামনে হারিয়ে যায়। কয়েক মিনিটের এই ভয়াবহ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস অফিসে জানালেও তারা ঘটনাস্থলে আসতে পারেনি ।যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় । অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত জাকির হোসেন উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত্যু সাত্তার শেখের পুত্র।
আগুন লাগার পর সংবাদ পেয়ে জাকির হোসেন দৌড়ে এসে দেখেন তাঁর ঘরটি দাউদাউ করে জ্বলছে। শিশুর পড়ার টেবিল থেকে শুরু করে পরিবারের প্রয়োজনীয় সব জিনিস—কিছুই আর রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তিনি শুধু পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে বের করে আনতে পেরেছেন। তাঁর চোখের সামনে পুড়ে যায় তাঁর দীর্ঘ পরিশ্রমের অবলম্বন, যা দিয়ে তিনি পরিবারকে আগলে রেখেছিলেন।
এই অগ্নিকাণ্ডে জাকির হোসেনের পুরো ঘর পুড়ে যায়। পাশাপাশি তাঁর দুই চাচা—মোশারেফ শেখ ও সারোয়ার শেখের ঘরও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক রাতেই তিন পরিবারের প্রায় ২০ লক্ষ টাকার বেশি সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। আগুনের লেলিহান শিখা এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে ঘরের ভেতর থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, আসবাব, পোশাক কিংবা কোনো মূল্যবান জিনিসপত্রও তারা বের করে আনতে পারেনি।
স্থানীয়রা পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও আগুন এতটাই ভয়াবহ ছিল যে কিছুই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে আগুন সবকিছু পুড়িয়ে দেয়। স্থানীয়দের ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার খোলা আকাশের নিচে রয়েছে। নেই ঘর, নেই শোবার জায়গা, নেই ব্যবহারের মতো কোনো জিনিস। শিশুদের কান্না, বড়দের অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে পরিবারগুলো খুবই কঠিন সময় পার করছে। শীতের রাতে কোথায় আশ্রয় নেবে, কীভাবে আবার নতুন করে ঘর তুলবে—এ নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে পরিবারের নারীরা ও বৃদ্ধ সদস্যরা খাদ্য, পোশাক ও আশ্রয়ের অভাবে চরম ভোগান্তিতে আছেন।
গ্রামবাসীরা মনে করছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া এখন জরুরি, নাহলে তাদের বিপদ আরও বাড়বে। অনেকেই নিজের সাধ্যমতো খাবার, কাপড় ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে সাহায্যের চেষ্টা করছেন, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অল্প।
জাকির হোসেনের বলেন, আমার ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যেখানে আমাদের সব স্মৃতি, পরিশ্রমের ফল জমা ছিল, তা মুহূর্তের মধ্যে শেষ হয়ে গেল। চোখের সামনে পুড়ে যাওয়ার এই দৃশ্য আমি ভুলতে পারি না। প্রতিটি জিনিসপত্র, আমার পরিবারের অংশ ছিল—সবকিছু আগুনে নষ্ট হয়ে যাওয়ার বেদনা অসহনীয়। এই ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে নেব, জানি না।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বিএনপি নেতা মনজুরুল হক (মঞ্জু) দুঃখ প্রকাশ করে জানান ঘটনা সোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা জাই কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যা মুহূর্তেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় । আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করবো এবং উপজেলা প্রশাসন যাতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেন ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া শাহনাজ তমা জানান, এবিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আবেদন করলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন ।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও