আজ
|| ১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
বার্ধক্য থামাতে ন্যানোফ্লাওয়ার প্রযুক্তি আবিষ্কার
প্রকাশের তারিখঃ ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
প্রভাত ডেস্ক: বয়স থামিয়ে দিয়ে তারুণ্য ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা নিয়ে যুগান্তকারী এক আবিষ্কারের পথ দেখালেন টেক্সাসের গবেষকরা। মানবদেহের বৃদ্ধ কোষকে পুনরুজ্জীবিত করার মতো প্রযুক্তি উদ্ভাবনের দাবি করেছেন তারা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন–এর ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই গবেষণার বিস্তারিত উঠে এসেছে।
গবেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবকোষে শক্তি উৎপাদনকারী অংশ মাইটোকন্ড্রিয়ার সংখ্যা ও কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। এর ফলেই হৃদরোগ, স্নায়ুরোগসহ বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এই অবক্ষয় ঠেকাতেই তৈরি করা হয়েছে বিশেষ এক ক্ষুদ্র কণা ন্যানোফ্লাওয়ার।
মলিবডেনাম ডাইসালফাইড দিয়ে তৈরি ফুলের মতো আকৃতির এই ন্যানোকণার রয়েছে স্পঞ্জ জাতীয় ছিদ্রযুক্ত গঠন। এটি কোষের ক্ষতিকর অক্সিজেন অণু (Reactive Oxygen Species) শোষণ করে এবং কোষে এমন জিন সক্রিয় করে যা নতুন মাইটোকন্ড্রিয়া তৈরি করতে সাহায্য করে। ফলে কোষের শক্তি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়।
গবেষক দলের সদস্য বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অখিলেশ গাহারওয়ার বলেন, আমরা সুস্থ কোষকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছি যাতে তারা দুর্বল কোষকে মাইটোকন্ড্রিয়া দিয়ে সাহায্য করতে পারে। এতে জেনেটিক পরিবর্তন বা কোনো ওষুধের প্রয়োজন নেই।
স্টেম সেল সাধারণত প্রতিবেশী কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া ভাগ করে। কিন্তু ন্যানোফ্লাওয়ার ব্যবহারে এই ভাগাভাগির হার প্রায় দ্বিগুণ হয়। কোষের শক্তি–উৎপাদন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, স্মুথ মাংসপেশির কোষে শক্তি উৎপাদন ৩–৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কেমোথেরাপি ক্ষতিগ্রস্ত হৃদপেশির কোষে বেঁচে থাকার হার অনেক বেশি। বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা, হৃদরোগ, পেশী ক্ষয়, স্নায়ুরোগসহ নানা অবক্ষয়জনিত রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলতে পারে
জেনেটিসিস্ট জন সুকার বলেন, এটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি। অসংখ্য রোগের চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। আমরা শুধু শুরুটা দেখেছি; সামনে আরও বড় আবিষ্কার আসবে।
সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ, ন্যানোফ্লাওয়ার প্রযুক্তি মানুষের আয়ু বাড়ানো, বয়সজনিত রোগ প্রতিরোধ এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু পুনর্গঠনে নতুন যুগের সূচনা করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনো প্রাথমিক গবেষণা পর্যায়ে থাকলেও এই আবিষ্কার অদূর ভবিষ্যতে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বড় বিপ্লব আনতে পারে এমনটাই বিশ্বাস গবেষকদের।
Copyright © 2025 প্রভাত. All rights reserved.