• সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৭:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাণীনগরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস আলোচনা সভা নাজিরপুরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা সংকট: জনবল ঘাটতি একটি মহল তারেক রহমানের চরিত্র হননের দুঃসাহস দেখিয়েছে: ফখরুল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্জনের স্বীকৃতি পেলেন বাইউস্ট শিক্ষার্থীরা ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির কাছে নতি স্বীকার করতে যাচ্ছে ইইউ বিষাক্ত পোকায় আতঙ্কিত আমেরিকাবাসি নামাচ্ছে কয়েক কোটি ‘প্রশিক্ষিত’ মাছি সিল করে দেয়া হয়েছে শ্রীনগর ইউক্রেনে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প, পুতিনকে নিয়ে অসন্তোষ তিব্বতের বিষয়গুলো ভারত-চীন সম্পর্কের পথে কাঁটা হয়ে আছে: বেইজিং

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির কাছে নতি স্বীকার করতে যাচ্ছে ইইউ

প্রভাত রিপোর্ট / ৪ বার
আপডেট : সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

প্রভাত ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুমান করার চেষ্টা করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে গত শনিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি জোটটির আত্মবিশ্বাসে বড় আঘাত হেনেছে। জোটটি এরই মধ্যে বাণিজ্যসংক্রান্ত আলোচনার সময় গোপনে আত্মসমর্পণ করেছে। কূটনীতিকেরা স্বীকার করেছেন, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায় ইউরোপ বাণিজ্যিক স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছে। গত তিন সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নে কী ঘটেছে, তা ফিরে দেখা যাক। জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইউরোপ ছিল কঠোর অবস্থানে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তির প্রদর্শন করেছে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে ইউরোপের ১৪০ কোটি ইউরো মূল্যের বাণিজ্য ঝুঁকির মুখে পড়ে। সে সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নেওয়া অবস্থানের প্রকাশ্য সমালোচনা করেছিলেন ইইউর কর্মকর্তা ও কূটনীতিকেরা। তাঁরা বলেছিলেন, কেবল গাড়ি, গরুর মাংস, বিমানের যন্ত্রাংশ ও ইথানলের মতো পণ্য নিয়ে এত হালকা কোনো চুক্তিতে তাঁরা কখনোই সই করবেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্য শুল্ক হ্রাস সংক্রান্ত যে চুক্তি করেছে, তা আইনিভাবে বাস্তবায়নযোগ্য কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এক কূটনীতিক দৃঢ় ভাষায় বলেছেন, ‘স্টারমারের মতো আমরা কখনোই কোনো চুক্তি করব না।’ অন্য এক কূটনীতিক বলেছেন, তাঁরা এমন একটি চুক্তির প্রত্যাশা করছেন, যা যুক্তরাজ্যের মতো হালকা নয়, আবার চীনের মতো প্রতিশোধমূলকও নয়।
গার্ডিয়ানকে এক কূটনীতিক বলেন, যদি ইউরোপ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ায় বা কঠোর নিয়মকানুনের দাবি না তোলে, তাহলে প্রশ্ন উঠবে, আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনভিত্তিক ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ তাহলে কী। এ সময় মানুষের চাকরির অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সামাজিক সুরক্ষা ও জনসেবার ঝুঁকির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান যেমন গুগল, মাইক্রোসফট, এক্সের (সাবেক টুইটার) ওপর করারোপের কথা তুলেছিল ইউরোপ। পাশাপাশি গাড়ি ও মদের ওপরও যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক দিতে হবে বলে হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল।
কিন্তু গত সপ্তাহে ইউরোপের অবস্থান পাল্টে যায়। ইইউ তখন যুক্তরাজ্যের মতোই একটি হালকা বা অতি সাধারণ চুক্তির পথে হাঁটছিল। তারা গাড়ি রপ্তানিতে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ ও ইস্পাত আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক থেকে কিছুটা ছাড় পেতে চাইছিল। এর বিনিময়ে তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা অধিকাংশ পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে রাজি ছিল। এ চুক্তির প্রস্তাব ট্রাম্পের টেবিলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আর গত বুধবার থেকে ইউরোপ তাঁর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান বদলানোর কারণ কী? এককথায় বললে, রাশিয়া। একজন কূটনীতিক গত সপ্তাহে স্বীকার করেন, জুনের মাঝামাঝি সময়ে ন্যাটো সম্মেলনে কিছু কঠিন সত্য সামনে এসেছে। সামরিক হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে আকাশে ও ভূমিতে বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র এবং গোয়েন্দা সক্ষমতা গড়ে তুলতে ইইউর আরও ৫-১০ বছর সময় লাগবে। এ বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা খুব জরুরি। ট্রাম্প ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় কেউ কেউ মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি চাটুকারিতার বিরোধিতা করলেও এক কূটনীতিক বলেছেন, ‘আমরা যা চেয়েছি, তা পেয়েছি।’ অন্য এক কূটনীতিক বলেছেন, ইইউ কখনোই জাপানের মতো কঠোর অবস্থান ধরে রাখতে পারবে না। তারা নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল নয়। আলোচনার এ মোড় পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে গত বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে এক কূটনীতিক বলেন, ‘এ প্রক্রিয়া ভীষণ কঠিন ছিল। আমার মনে হয়, এ আলোচনাগুলোকে আলাদা করে দেখা কঠিন।’ ওই কূটনীতিক আরও বলেন, ‘এসব বিষয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের পুরো সম্পর্ককে প্রভাবিত করছে। এর মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা ও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা। এ ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি দুটি দিক রয়েছে। আমরা এমন একটি সমাধান খুঁজছি, যাতে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মধ্যে ভারসাম্য করা যায়।’
কূটনীতিকেরা স্বীকার করেন, তাঁরা যে একটি চুক্তির আশা করছিলেন, সেটাই ছিল বড় ধরনের ছাড়। কিন্তু এবার ট্রাম্পের কারণে খেলাটা আবার ঘুরে গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক প্রায় নিশ্চিতভাবেই বাণিজ্যযুদ্ধ বাধিয়ে দেবে। এমনকি ১৫ শতাংশ শুল্কের বোঝাও সহ্য করা কঠিন হবে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও