প্রভাত রিপোর্ট: তিন দফা দাবিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো এই কর্মসূচি চলছে। বিকেলে দেয়াললিখন ও গ্রাফিতি কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষার্থীরা। বুয়েটের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা দেয় প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন।
সকাল ১০টায় সরেজমিনে বুয়েটের বেশ কয়েকটি বিভাগ ঘুরে দেখা যায়, কোথাও শিক্ষার্থীরা আসেননি। তবে কিছু কিছু বিভাগে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসতে দেখা গেছে। যন্ত্রপ্রকৌশল ভবনের নিরাপত্তারক্ষী মাসুদ রানা বলেন, ‘পরীক্ষা তো বন্ধ করা হয়েছে। স্টুডেন্টরা কেউ আসেনি।’
তবে এ সময় বিচ্ছিন্নভাবে দু–এক শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে চলাচল করতে দেখা গেছে। এমন একজন শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে নাম না জানিয়ে তিনি বলেন, গবেষণাবিযয়ক জরুরি প্রয়োজনে তিনি এসেছেন।
এ বিষয়ে বুয়েটের উপাচার্য দপ্তরের একজন কর্মকর্তা প জানান, ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে।
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ আজ সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে এবং চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেলে তাঁরা বুয়েট ক্যাম্পাসে দেয়াললিখন ও গ্রাফিতি অঙ্কন করবেন। গত বুধবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঘোষণা অনুযায়ী, বুয়েটসহ দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন কর্মসূচি পালন করার কথা রয়েছে।
তিন দফা দাবি
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো নবম গ্রেড সহকারী প্রকৌশলী পদে কেবল পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ ও ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার করা; দশম গ্রেডে শুধু ডিপ্লোমাধারীরা আবেদন করতে পারেন, সেখানে যেন উচ্চ ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা এবং শুধু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং যাঁরা সম্পন্ন করবেন, তাঁরাই যেন প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ার) লিখতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।
প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তিদের পেশাগত দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার।
তিন দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
একপর্যায়ে তাঁরা বেলা দেড়টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যেতে শুরু করেন। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় তাঁদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। তখন লাঠিপেটার ঘটনাও ঘটে। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন।